ভারতে নিখোঁজ এমপি আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ উদ্ধার

ভারতে চিকিৎসা করাতে এসে নিখোঁজ বাংলাদেশি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ। গত ৮ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর কলকাতার নিউ টাউনের বিলাসবহুল আবাসন ‘সঞ্জিভা গার্ডেন’ থেকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এই এমপির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়ে এমপি আনোয়ারুল আজিম তার যে বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন, সেই গোপাল বিশ্বাস বুধবার সকালে পুলিশের কাছ থেকে আনারের লাশ উদ্ধারের খবর পান বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে স্থানীয় পুলিশের ধারণা, এমপি আনোয়ারুল আজিমকে খুন করা হয়েছে। তবে তাকে কে বা কারা, কেন খুন করেছে; এ বিষয়ে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানায়নি পুলিশ।এরইমধ্যে নিউ টাউন থানার পুলিশ এবং বিধান নগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ ও এইচডিএফ কর্মকর্তারা তদন্তে নেমেছেন। ওই আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তারা।
এদিকে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস জানিয়েছে, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে অফিশিয়ালি কোনও তথ্য জানানো হয়নি। তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর তারা (উপ-দূতাবাসের কর্মকর্তা) দুই দেশের পুলিশ ও তদন্তকারীদের মধ্যে যোগাযোগ করিয়ে দেন। তদন্তকারীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখে কাজ করছিলেন।
চিকিৎসা করাতে গত ১২ মে কলকাতা এসেছিলেন ওই সংসদ সদস্য। প্রথম দুদিন তার সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও ১৪ মে থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় তার ফোন ‘সুইচ অফ’ ছিল। তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে আনোয়ারুলের পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হয়। সেখান থেকে ভারতের দিল্লি ও কলকাতায় বাংলাদেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে ওই সংসদ সদস্যের খোঁজে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। সংস্থাটি জানায়, দিল্লি ও কলকাতা দূতাবাসের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পরই তার খোঁজে তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। এরইমধ্যে তার মরদেহ উদ্ধার করা হলো।
জানা গেছে, চিকিৎসার জন্য গত ১২ মে দুপুরের দিকে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এমপি আনোয়ারুল আজিম। ওইদিন সন্ধ্যায় কলকাতার অদূরে ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার বরাহনগর থানার মন্ডলপাড়া লেনের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে পৌঁছান।
এরমধ্যে বিশেষ প্রয়োজনের কথা জানিয়ে গোপালের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এমপি আনোয়ারুল আজিম। পরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে কলকাতার বরাহনগর থানায় গত ১৮ মে লিখিত ‘মিসিং ডায়েরি’ করেন গোপাল বিশ্বাস।
বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, ‘আমাদের ও ভারতের ইমিগ্রেশন পার হয়ে যথাযথভাবেই তিনি ভারতে যান। তার পরিবার থেকে আমাদের জানানো হয়েছিল যে তার কোনও খোঁজ খবর পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি সব সংস্থা এটা নিয়ে কাজ করছে। আমাদের এনএসআই, এসবি ও পুলিশ কাজ করছে। ভারতীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি ভারতীয় সরকারের মাধ্যমে শিগগিরই তার বিষয়ে জানতে পারবো।