আইন মেনেই তৈরি হয়েছে মন্দির: মোদি

ভারতের অযোধ্যায় বহুল আলোচিত রাম মন্দির উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার সকালে এ মন্দির উদ্বোধন করতে তিনি অযোধ্যায় যান। সকাল থেকেই নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এরপর মন্দিরের প্রধান কক্ষে রাখা দেবতা রামের মূর্তির চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। আর এর মাধ্যমে রামের ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ সম্পন্ন হয়। পুরো এ প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেন নরেন্দ্র মোদি।
রাম মন্দিরের মূল চত্ত্বরেই মোদির জনসভার আয়োজন করা হয়। তিনি মন্দির উদ্বোধনের মূল পর্ব শেষ করে জনসভায় বক্তৃতা দেন। মোদি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘২২ জানুয়ারি শুধু কোনো তারিখ নয়, নতুন কালের শুরু। রাম আর তাঁবুতে নয়, এ বার মন্দিরে থাকবেন। অনেক কথা বলার আছে, কিন্তু কণ্ঠ অবরুদ্ধ।’
মোদি বলেন, ‘রামের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আমাদের বিচার বিভাগ বিচার সুনিশ্চিত করেছে। আইন মেনেই তৈরি হয়েছে মন্দির। নিশ্চয়ই আমাদের চেষ্টা, ত্যাগে কোনো কমতি ছিল। তাই আমরা এতগুলো শতাব্দী ধরে এই কাজ করতে পারিনি। আজ সেই কাজ শেষ হল। আশা করি প্রভু রাম নিশ্চয়ই আমাদের ক্ষমা করে দেবেন।’
রাম মন্দিরকে শুধু মন্দির নয়, ভারতের দর্শন আখ্যা দিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা অনুভব করছি সেটাই ওঁর (রাম) কৃপা। এই সময় শুধু বিজয়ের নয়, একই সঙ্গে বিনয়েরও।’
রাম মন্দির উদ্বোধনের সময় নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল আবন্দীবেন প্যাটেল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএএস) প্রধান মোহন ভাগবত প্রমুখ।
বক্তব্য শেষ করার পরই রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি, অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া ও তাঁর ছেলে তথা জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামীকে করজোড়ে নমস্কার করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এনডিটিভি বলছে, ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হওয়ার পর ১১ দিনের উপবাস ব্রত ভাঙেন মোদি। এ সময় তাঁকে গ্লাস থেকে চামচে করে ‘চরণামৃত’ খাইয়ে উপবাস ভাঙান শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের গোবিন্দদেব গিরি মহারাজ। নরেন্দ্র মোদি রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে শরীর ও আত্মা পবিত্র করার উদ্দেশ্যে ১১ দিনের ‘উপবাস ব্রত’ পালন করছিলেন। এটি ‘কঠিন ব্রত’ নামেও পরিচিত।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ৩৫ বছরের পুরোনো সেই বিতর্ককে সামনে এনে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এবং এর মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে ক্ষমতায়ও এসেছে দলটি।
তবে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি ভারতের কংগ্রেসসহ বেশিরভাগ বিরোধীদল। এমনকি হিন্দু ধর্মাবলম্বী অনেক ধর্মগুরুও এ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। তাদের ভাষ্য, ধর্মীয় উদ্দেশ্য নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই মোদি এ মন্দির নির্মাণ করেছেন।