স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশের সবকিছু ধ্বংস করেছে : তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও "আমরা বিএনপি পরিবার"-এর প্রধান উপদেষ্টা তারেক রহমান অভিযোগ করেছেন যে, স্বৈরাচারী শাসক দেশ ধ্বংস করে দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে। তিনি দাবি করেন, বিএনপির নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষকে গুম ও হত্যা করা হয়েছে, যা ক্ষমা করার নয়।
বুধবার (তারিখ) "আমরা বিএনপি পরিবার"-এর উদ্যোগে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় "জুলাই-আগস্ট বিপ্লব"-এ শহিদ হওয়া ৪৫টি পরিবারের মাঝে আর্থিক অনুদান ও র্যাবের গুলিতে নিহত মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে একটি ঘর উপহার দেওয়া হয়। এ উপলক্ষে সোনাগাজী সরকারি ছাবের মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “পতিত স্বৈরাচার ১৭ বছর ধরে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সেই অধিকার পুনরুদ্ধারে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে লড়াই করেছেন, তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিগত ১৭ বছরের সংগ্রাম ও সাম্প্রতিক জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশকে নতুন পথে এগিয়ে নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে দেশে সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে, কিন্তু এই সংস্কারের প্রস্তাব আমরা দুই বছর আগেই দিয়েছিলাম। সেই সময় স্বৈরাচার সরকার আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। তাই, জাতির স্বার্থে বিএনপি এখন ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।”
বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজ দেশের মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা। শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তায় মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছে। আমাদের এসব বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে, যাতে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা যায়।”
তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন, “দ্রুত একটি জাতীয় নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। জনগণের নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং শহিদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।”
বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “বিএনপি সবসময় দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করেছে এবং করবে। বিএনপির জনপ্রিয়তার মূল কারণ হলো, জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রাখে। তাই, দলকে আরও শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
অনুষ্ঠানে শহিদ পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের মধ্যে অনুদান বিতরণ করা হয়। ২০১৬ সালের ২৫ জুন র্যাবের গুলিতে নিহত মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে একটি ঘর প্রদান করা হয়। এছাড়া ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে গণআন্দোলনে নিহত ৪৫ জন শহিদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন "আমরা বিএনপি পরিবার"-এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন।
এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন, নির্বাহী কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ বকুল, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, সহ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমদ বেলাল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট শাহানা আক্তার শানু, আবদুল লতিফ জনি, জালাল আহমদ মজুমদার, মামুনুর রশিদ, মশিউর রহমান বিপ্লব প্রমুখ।
এ সময় শহিদদের স্বজনরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং বিএনপি নেতারা তাদের প্রতি সমবেদনা জানান।