আগৈলঝাড়ায় বিষাক্ত দ্রব্য সেবনে ৭ জন হাসপাতালে

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় ৬ দিনে ৭ জন বিষাক্তদ্রব্য সেবনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতাল সূত্র বলছে, অসুস্থদের স্বজনদের দেয়া তথ্যানুযায়ী এদের মধ্যে বেশিরভাগই কীটনাশক জাতীয় বিষাক্তদ্রব্য সেবন করে আত্মহননের চেষ্টা চালিয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতান্ডা, ঝগড়া ও অভিমান এবং পারিবারিক নানান কলহের জের ধরে আত্মহননের চেষ্টা চালায় তারা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও রেকর্ড সূত্রে জানাগেছে, গত শনিবার উপজেলার গৈলা গ্রামের আজিম বালি নামে ১৭ বছরের এক য্বুক বিষাক্তদ্রব্য সেবনে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন রোববার উপজেলার পূর্ব সুজনকাঠী গ্রামের মনি বেগম (২৩) ঘরে থাকা কীটনাশক সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা। এছাড়া এর একদিন পরে মঙ্গলবার উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের কর্ন মন্ডল (২৫) বিষাক্তদ্রব্য সেবন আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরের দিন বুধবার উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের ইব্রাহিম সরদার (১৭) কীটনাশক সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার উপজেলার সীমান্তবর্তী কারফা গ্রামের রসনা বিশ্বাস (৪০) এবং শুক্রবার উপজেলার কোদালধোয়া গ্রামের অনামিকা দাস (১১) কীটনাশক সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এছাড়া শনিবার সকালে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের নয়ন রায় (১৮) কীটনাশক সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। যাদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মো. বখতিয়ার আল মামুন জানান, হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী আত্মহত্যার চেষ্টাকারীদের বয়স ১১ থেকে ৪০ এর মধ্যে। এক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি প্রয়োজন পারিবারিক সচেতনতা।
তবে স্থানীয় সূত্র বলছে, ইরি-বোরো মৌসুমে স্থানীয়ভাবে ধানের ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর এসব কীটনাশক ব্যবহারের আগে ও পরে ঘরে রাখার কারণে হাতের কাছেই থাকছে। আর ঘরে কীটনাশক অরক্ষিত থাকলেই তা হাতের কাছ পাচ্ছেন যারা তারা আবেগ প্রবণ হলে সহজেই সেবন করে আত্মহননের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাই কীটনাশক ব্যবহার করে অবশিষ্ট অংশ ফেলে দেয়া উচিত বলে মনে করেন চিকিৎসকসহ স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
আর পরিবার সদস্যদের সচেতনতার সাথে কীটনাশক ব্যবহার ও সংরক্ষণ করা উচিত বলে মনে করেন আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ছরোয়ার।