আবারও হাইকোর্টে আসতে হবে সিলেটের ডিসিকে

আদালতের নির্দেশনার পরও সর্বোচ্চ দরদাতা ব্যক্তিকে পাথর বুঝিয়ে না দেয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। তবে আদালত অবমাননার জবাব সঠিকভাবে দাখিল না করায় তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেননি আদালত। এ কারণে তাকে আবারও সশরীরে উপস্থিত হতে হবে হাইকোর্টে।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট শেখ আওসাফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন। ওই দিন ডিসিকে আবারো উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। ওইদিন এ বিষয়ে শুনানি ও আদেশ দিবেন হাইকোর্ট।
আদালতে ওই দিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শেখ আওসাফুর রহমান বুলু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। ডিসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ শফিক মাহমুদ।
অ্যাডভোকেট শেখ আওসাফুর রহমান জানান, সিলেটের কানাইঘাট এলাকার লাভা নদী থেকে তোলা লোভছড়া পাথর কোয়ারি জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর জব্দ করে। এই পাথরগুলো নিয়ে একাধিক মামলা হয়। ওই মামলা চলাকালীন সিলেটের জেলা প্রশাসক এবং পরিবেশ অধিদফতর মিলে ডিসির তত্ত্বাবধানে এক লাখ ঘনফুট পাথর নিলামে তোলে। নিলামে পাথরের সর্বোচ্চ দরদাতা হন রিট আবেদনকারী নিজাম উদ্দিন। নিলামের অর্থও তিনি জমা দেন। টাকা জমা দেয়ার পরও তাকে পাথর দেয়া হয় না। পাথর না পেয়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে সমাধান খুঁজতে যান। পাথর পাওয়ার জন্য লিখিত আবেদনও করেন। তারপরও পাথর না দেয়ায় নিজাম উদ্দিন হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে বলা হয়, এক লাখ ঘনফুট পাথরের সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় তাকে পাথরগুলো দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২০২০ সালের ১ অক্টোবর তাকে পাথর দেয়া সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের চিঠি এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয়া হয়। পরিবেশ অধিদফতরও জানায়, এই পাথর বিক্রির কর্তৃত্ব জেলা প্রশাসকের। আদালতের আদেশ পাওয়ার পরও সিলেটের জেলা প্রশাসক কোনো ব্যবস্থা নেননি। আদালতের আদেশ পালন করেননি।
আদালতের ওই আদেশ পালন না করায় গত ১০ জানুয়ারি সিলেটের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়। ওই মামলার শুনানি নিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসককে (ডিসিকে) তলব করেন হাইকোর্ট। তলবে তিনি ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে মৌখিকভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে যথাযথভাবে আদালত অবমাননার জবাব দাখিল করেননি। তাই আদালত তাকে ব্যক্তি হাজিরা থেকে অব্যাহতি না দিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি আবারও আসতে বলেছেন। ওই দিন পরবর্তী আদেশ দিবেন আদালত।
ভোরের আলো/ভিঅ/০১/০২/২০২১