একজন দূরদর্শী নেতা মাওলানা ভাসানী

একজন দূরদর্শী নেতা মাওলানা ভাসানী

 

ভাসানীর ‘আসসালামুআলাইকুম’ শব্দের অর্থ অনেকরই জানা। তবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই সালামের অর্থ অন্য হবে। কেন তিনি পশ্চিমা শাসকদের ‘আসসালামুআলাইকুম’ বলেছিলেন? সেটা একটা কালজয়ী ইতিহাসের অংশ। তাই তো ঐতিহাসিক ঘটনার নায়ক তিনি। ১৯৫৭ সাল। টাঙ্গাইলের সন্তোষে কাগমারী সম্মেলনে পাকিস্তানী শাসকদের ‘আসসালামুআলাইকুম’ বলে সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতার ঐতিহাসিক ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন মাওলানা ভাসানী। ওই বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি কাগমারি সম্মেলনে মওলানা ভাসানী বলেন, ‘পূর্ববাংলা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসকদের দ্বারা শোষিত হতে থাকলে পূর্ববঙ্গবাসী তাদের সালামু ওআলায়কুম জানাতে বাধ্য হবে। এছাড়া কাগমারী সম্মেলনে ভাসানী পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিলেরও দাবি জানান। তাইতো ইতিহাসের নায়ক হয়ে আছেন মানুষের অন্তরে। তিনি হচ্ছেন ভাসানী। মাওলানা ভাসানী। আমাদের মজলুম জননেতা ভাসানী। তাঁর প্রতি আমাদের বিন¤্র শ্রদ্ধা।

ভাসানী। আবদুল হামিদ খান ভাসানী। মাওলানা ভাসানী। মজলুম জননেতা ভাসানী অবিভক্ত বাংলার অনন্য দূত। আজন্ম অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দঁড়ানো মানুষ হচ্ছেন মাওলনা ভাসানী। ব্রিটিশ, ভারত, পাকিস্তান যেখানেই অন্যায় দেখেছেন সেখানেই রুখে দাঁড়িয়েছেন। সাধারণ চাষা, মুটে মজুররা ছিল মাওলানা ভাসানীর আত্মার আত্মীয়। তাদের নিয়ে বেশি ভাবতেন তিনি। সফেদ দাড়ি আর গোল টুপির দীর্ঘদেহী মানুষ মাওলানা ভাসানী ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা।

মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া পল্লীতে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হাজী শারাফত আলী। হাজী শারাফত আলী ও বেগম শারাফত আলীর পরিবারে ৪ সন্তানের মধ্যে  মো. আব্দুল হামিদ খান সবার ছোট। ছেলে-মেয়ে বেশ ছোট থাকা অবস্থায় হাজী শারাফত আলী মারা যান। কিছুদিন পর এক মহামারীতে বেগম শারাফত ও দুই ছেলে মারা যায়। বেঁচে থাকেন ছোট শিশু আব্দুল হামিদ খান। এরপর তার জীবনে নানা চরাই উৎরাইর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ১৯০৩ সালে ২৩ বছর বয়সে তিনি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনে যুক্ত হন।

মওলানা ভাসানী ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ ও গণআন্দোলনের নায়কের নাম। ১৯৪৭ এ ধর্মের নামে দেশ ভাগের বিরুদ্ধে অবস্থান তৈরি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন মাওলানা ভাসানী। বাংলাদেশের মানুষের কাছে মজলুম জননেতা হিসাবে সমধিক পরিচিত তিনি।

১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী নেতাদের মধ্যে অন্যতম মাওলানা ভাসনী। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায়ও তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময়ই তিনি মাওপন্থী কমিউনিস্ট, তথা বামধারার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অনেকে এজন্য তাকে লাল মওলানা নামেও ডাকতেন। তিনি কৃষকদের জন্য পূর্ব পাকিস্তান কৃষক পার্টি করার জন্য সারাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস ময়মনসিংহ সফরে গেলে তার ভাষণ শুনে ভাসানী অনুপ্রাণিত হন। ১৯১৯ সালে কংগ্রেসে যোগদান করে অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯২৩ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন স্বরাজ পার্টি গঠন করলে ভাসানী সেই দল সংগঠিত করার ব্যাপারে ভূমিকা পালন করেন। ১৯২৬ সালে তিনি আসামে প্রথম কৃষক-প্রজা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান। ১৯২৯ সালে আসামের ধুবড়ী জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাসান চরে প্রথম কৃষক সম্মেলন আয়োজন করেন ভাসানী। এখান থেকে তার নাম রাখা হয় ভাসানীর মাওলানা। এরপর থেকে তার নামের সঙ্গে ভাসানী শব্দ যুক্ত হয়।

১৯৩১ সালে সন্তোষের কাগমারীতে, ১৯৩২ সালে সিরাজগঞ্জের কাওরাখোলায় ও ১৯৩৩ সালে গাইবান্ধায় বিশাল কৃষক সম্মেলন করেন। ১৯৩৭ সালে মওলানা ভাসানী কংগ্রেস ত্যাগ করে মুসলিম লীগে যোগদান করেন। সেই সময়ে আসামে 'লাইন প্রথা' চালু হলে এই নিপীড়ণমূলক প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দান করেন। এসময় তিনি ‘আসাম চাষী মজুর সমিতি’ গঠন করেন এবং ধুবরী, গোয়ালপাড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১৯৪০ সালে শের-ই-বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের সঙ্গে মুসলিম লীগের লাহোর সম্মেলনে যোগদেন। ১৯৪৪ সালে মাওলানা ভাসানী আসাম প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪৫-৪৬ সালে আসাম জুড়ে বাঙালিদের বিরুদ্ধে ‘বাঙ্গাল খেদাও’ আন্দোলন শুরু হলে বাঙালিদের রক্ষার জন্য ভাসানী বারপেটা, গৌহাটিসহ আসামে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

১৯৪৮ সালে মুসলিম লীগ দলের সদস্য হয়েও সরকারের সমালোচনা করায় মুসলিম লীগের ক্ষমতাসীন সদস্যরা মওলানা ভাসানীর ওপর ক্ষুব্ধ হন। ১৯৪৯ সালের ২৩-২৪ জুন ঢাকার টিকাটুলিতে রোজ গার্ডেনে মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলন আহ্বান করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন আতাউর রহমান খান। মওলানা ভাসানী ছিলেন প্রধান অতিথি। ২৩ জুন পূর্ববঙ্গের প্রথম বিরোধী রাজনৈতিক দল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়। মওলানা ভাসানী সর্বসম্মতিক্রমে এই দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শামসুল হক এবং যৌথভাবে যুগ্মসম্পাদক নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও খন্দকার মোশতাক। ওই বছর ১১ অক্টোবর ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মওলানা ভাসানী ভুখা মিছিলে নেতৃত্ব দেন।
বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা জেলার বার লাইব্রেরি হলে মাওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সহযোগিতার কারণে গ্রেপ্তার হন মওলানা ভাসানী।

১৯৫৩ সালের ৩ ডিসেম্বর কৃষক-শ্রমিক পার্টির সভাপতি শের-ই-বাংলা এ. কে. ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট নামক নির্বাচনী মোর্চা গঠন করেন মাওলানা ভাসানী। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে ফজলুল হকের নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। ১৯৫৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ-রিপাবলিকান পার্টির কোয়ালিশন সরকার গঠিত হলে মাওলানা ভাসানী সরকারের পররাষ্ট্রনীতির বিরোধিতা করে নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বন করার জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করেন।

১৯৫৬ সালে পাকিস্তান গণপরিষদে যে খসড়া শাসনতন্ত্র বিল পেশ করা হয় তাতে পাকিস্তানকে ইসলামিক রিপাবলিক বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তখন মওলানা ভাসানী পল্টনের জনসভায় তার বিরোধিতা করে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছিলেন। ১৯৫৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কাগমারী সম্মেলনে ভাসানী পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিলের দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রী সোহ্রাওয়ার্দী সেই দাবি প্রত্যাখান করলে মাওলানা ভাসনী আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন। ওই সময় তিনি ‘ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি’ (ন্যাপ) গঠন করেন। ন্যাপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভাসানী প্রকাশ্যে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এর পর থেকে সবসময় বাম ধারার রাজনীতির সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট ছিলেন মাওলানা ভাসানী।

১৯৬২ সালে ন্যাশনাল ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট-এর রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গেও জড়িত হন তিনি। ১৯৬৫ সালে আইয়ুব খানের পররাষ্ট্র নীতির প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন ভাসানী। ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থাপিত ছয় দফা কর্মসূচির বিরোধিতা করেন তিনি।

১৯৬৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার রেডিও এবং টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীত প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ জারি করলে এর প্রতিবাদ করেন মাওলানা ভাসানী। ১৯৬৭-র নভেম্বর-এ ন্যাপ দ্বি-খন্ডিত হলে চীনপন্থি ন্যাপের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন ভাসানী। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে মাওলানা ভাসানী বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামীদের মুক্তি দাবি করেন তিনি। এসময় তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে গিয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টোর সঙ্গে সাক্ষাত করে গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র কায়েমের লক্ষ্যে একমত হন। ২৬ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খান কর্তৃক আহুত গোলটেবিল বৈঠক প্রত্যাখান করে শ্রমজীবীদের ঘেরাও কর্মসূচি পালনে উৎসাহ প্রদান করেন। আইয়ুব খান সরকারের পতনের পর নির্বাচনের পূর্বে ভোটের আগে ভাত চাই, ইসলামিক সমাজতন্ত্র কায়েম ইত্যাদি দাবি উত্থাপন করেন তিনি।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন প্রদান করেন মাওলানা ভাসানী। ১৯৭১ সালের ১৮ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদানের জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন তিনি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতে গঠিত মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন ভাসানী।

১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল মওলানা ভাসানী একটি বিবৃতি প্রদান করেন যা ভারতীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এছাড়া মাওলানা ভাসানী চীনের নেতা মাও সেতুং, চৌ এন লাই এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে তার বার্তা পাঠিয়ে তাদের অবহিত করেন যে, ‘পূর্ববঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্যাপকহারে গণহত্যা চালাচ্ছে। সেজন্য তিনি প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে অনুরোধ করেন এই মর্মে যে, তিনি যেন পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ না করেন। উপরন্তু মওলানা ভাসানী প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবার আহ্বান জানান’।

১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল মওলানা ভাসানী সোভিয়েত রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে পাকিস্তান বাংলাদেশের জনগণের ওপর যে বর্বরোচিত অত্যাচার চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অণুরোধ করেন। ৩১ মে মওলানা ভাসানী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ দখলদার বাহিনীর সঙ্গে জীবনমরণ সংগ্রামে লিপ্ত। তারা মাতৃভূমি রক্ষার জন্য বদ্ধপরিকর। তারা এই সংগ্রামে জয়লাভ করবেই’। ৭ জুন মওলানা ভাসানী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশের সব অঞ্চল আজ দশ লাখ বাঙালির রক্তে স্নাত এবং এই রক্তস্নানের মধ্য দিয়েই বাংলার স্বাধীনতা আসবে’।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ দু’বার ভারতের কোহিনুর প্যালেসে এসে মওলানা ভাসানীর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন এবং তার পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রার্থনা করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সর্বদলীয় রূপ দেয়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে আট সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হয়। যার সভাপতি ছিলেন মওলানা ভাসানী। ওই উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন, তাজউদ্দীন আহমদ, মণি সিংহ, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, মনোরঞ্জন ধর প্রমুখ। মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে ওই উপদেষ্টা কমিটির সভায় এই মর্মে অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে, পূর্ববঙ্গের পূর্ণ স্বাধীনতা ব্যতিরেক অন্য কোন প্রকার রাজনৈতিক সমাধান গ্রহণযোগ্য হবে না। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মওলানা ভাসানী কলকাতা ছাড়াও দেরাদুন, দিল্লী ও অন্যান্য স্থানে অবস্থান করেন।

মওলানা ভাসানী ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭২-এর ২৫ ফেব্রুয়ারি সাপ্তাহিক হক-কথা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীচুক্তির বিরোধিতা করলেও মুজিব সরকারের জাতীয়করণ নীতি এবং ১৯৭২-এর সংবিধানের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন তিনি। এসময়  মাওলানা ভাসানী বলেছিলেন, ‘আসাম আমার, পশ্চিমবঙ্গ আমার, ত্রিপুরাও আমার। এগুলো ভারতের কবল থেকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মানচিত্র পূর্ণতা পাবে না।’ ১৯৭৬-এর ১৬ মে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লং মার্চে নেতৃত্ব দেন মাওলানা ভাসানী। একই বছর ২ অক্টোবর খোদাই খিদমতগার নামে নতুন আর একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন ভাসানী। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই দেশ বরেণ্য নেতা মৃত্যুবরণ করেন। আজ তাঁর মৃত্যুদিনে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।