এমন চমৎকার পূর্ণিমায় লন্ঠনের কি প্রয়োজন

এমন চমৎকার পূর্ণিমায় লন্ঠনের কি প্রয়োজন

ভেবেছিলাম চেয়ে নেবো, আমি নেইনি সাহস করে। এইযে ভেবেছিলাম আর নেইনি সাহস করে, একে কি বলা যায়। মূলত এই হচ্ছে জীবনের চলমান প্রবাহে মূল সুর। যাকে বলা যায় নিয়ন্ত্রণ রেখা বা সংযম। আরো ব্যাপক অর্থে বলা যেতে পারে অবলিলায় এর নাম কর্মাব্রু। অর্থাৎ সকল কর্মের এক সঠিক নৈতিক কর্মপরিমাপ। যা প্রতিদিন স্খলিত হচ্ছে আমাদের সার্বিক কর্মকান্ড থেকে। এখন আপনি আমি আমরা কোথাও না কোথাও আব্রুহীন হয়ে যাচ্ছি। এখন আমাদের খাবার আব্রুহীন, দৃষ্টি আব্রুহীন, বোধ বুদ্ধি নীতি নৈতিকতা আব্রুহীন। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের কোন আব্রু কি এখন আছে অবশিষ্ট? একই ভাবে আব্রুসংকটে কি নেই আমাদের আইন বিচার প্রসাশন এবং রাজনীতি? আব্রুহীনতার এই ধারা হঠাৎ করে নয় ধীর ধীরে এই অধপাত নেমে এসেছে আমাদের জাতীয় জীবনে। আমরা এই আব্রুহীনতা শুরু করলাম, আমাদের অহংকার বাঙালির অস্তিত্ব নির্মাণের সুতিকাগার ১৯৫২’এর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পনের প্রভাতফেরির পরিবর্তন ঘটিয়ে। এবং সেটা যেদিন থেকে প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পন করতে শুরু করলাম। নগ্ন পা, নতশীর, ভাষার গান, সেই দিন থেকে তার আব্রু হারিয়ে রাষ্ট্রচ্যুত হলো। ১৯৭১’এ এসে মহান স্বাধীনতার অর্জন এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে রক্তিম সূর্য উদিত হলো এই দেশে, তাকে ১৯৭৫ এ এসে আব্রুহীন করে দেওয়া গেলো। হত্যা করা হলো স্বাধীনতার জনক শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুকে। হত্যা করা হলো তার পরিবারের প্রায় সকলকে, হত্যা করা হলো কর্নেল সাফায়াত জামিলকে, অব্দুর নাইম খান রিন্টুকে। পরবর্তিতে কারা অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে। তার পর থেকে আব্রুচ্যুত হতে থাকলো আমাদের রাজনীতির সকল ধারা এবং সংবিধান। আব্রুচ্যুত হলো জাতীর পতাকা, তার জায়গা হলো যুদ্ধাপরাধীর গাড়িতে, বাড়িতে। পদে পদে লজ্জিত হতে থাকলো আমাদের অর্জন। আমরা এক নির্লজ্জতার নিন্দাপঙ্কে হারিয়ে যেতে থাকলাম।

সেই আব্রুহীনতার রেওয়াজ মুক্ত হওয়া সম্ভব হয়নি আজো। আমরা প্রতিদিন একজন আরেকজনকে এক অবস্থান আর এক অবস্থানকে এক সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে আব্রুহীন করে চলেছি কঠিন হীনস্বার্থে। এ প্রতিযোগিতা সমাজের উঁচু নিচু সকল ক্ষেত্রে। ডাক্তার প্রতিদিন আব্রুহীন করে চলেছে ঔষধ ও রোগীকে, রোগী ও ঔষধ ডাক্তারকে। উকিল মক্কেলকে, মক্কেল উকিলকে। পুলিশ নিয়মকে, অনিয়ম পুলিশকে। আইন প্রশাসনকে, প্রশাসন আইনকে। পকেট টাকাকে, টাকা পকেটকে। সাংবাদিক সংবাদকে, সংবাদ সাংবাদিককে। ভোটার নেতাকে, নেতা ভোটারকে। শিক্ষক ছাত্রকে, ছাত্র শিক্ষককে। এভাবে সমাজের সকল শ্রেণির পেশাদারদের মধ্যে এখন চলছে আব্রুহীন হওয়ার সীমাহীন প্রতিযোগিতা। এর থেকে মোটেই বিচ্ছিন্ন নয় ধর্ম এবং সাংস্কৃতিক চর্চাও। সর্বত্র অযোগ্য অসভ্য আকড়ে থাকা মানুষদের নির্লজ্জ অশ্লিল চটুল প্রয়োগ চলছে আব্রুহীনতার। 

তবে কি হবে আমাদের? শুধুই দোষারোপ চলবে একের প্রতি অন্যের? কোন পথ কি পাবো না খুঁজে যেখানে আমরা সকল দায় নিয়ে স্থির হয়ে বলবো এ কাজ আমি করেছি। এ অন্যায় আমার দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। মানুষের ভুল হয়, সেই ভুলের সংশোধন কি খুঁজে পাওয়া যাবে কোন অরণ্যে জন্তু জানোয়ারের মাঝে? কেন আমি, আমরা, আমাদের সততা, স্পষ্টতা, পবিত্রতা দিয়ে আমাদের চারপাশের স্পষ্ট পরিশুদ্ধ দৃষ্টির ভীত নির্মাণ করতে পারবো না? আমরা কেন বারবার ভুলে যাই আমাদের সবার এবং সর্বপরি রাষ্ট্রেরও সকল কাজের ইমান থাকে, থাকতে হয়। রাষ্ট্রেরও সকল অর্জনগুলির যথাযথ আব্রুর প্রয়োজন হয়। 

তা যদি না হয় কিংবা তা যদি করতে না পারি তবে আব্রু শব্দের আক্ষরিক অর্থ শুধুমাত্র একখন্ড বস্ত্র দ্বারা ঢেকে রাখা নির্দিষ্ট কোন অবয়বকেই বুঝাবে। যেখানে পৃথীবির আলো পৌঁছাবে না, বাতাস চলার পথ রুদ্ধ হবে। এক অদৃশ্য অন্ধকার তার আকার আকৃতি বৃদ্ধি করে চলবে শরীর ও মনে। যেখানে দাঁড়িয়ে মানুষ নামের অযোগ্যতাই প্রলম্বিত হবে। অথচ আমরা জানি বিষয়টি ঠিক এমনটা নয়! 

নদী তার চলমান ধারায় গতি হারালে পলি এসে তার শরীরটাকে ক্ষীণ করতে করতে এক সময় বালির ভাগারে পরিণত করে দেয়। নদী আব্রুহীন হয়ে যায়। আমরা জানি, নদীর আব্রু তার খরস্রোত ধারা নিয়ে ধাবমান গতির মধ্যে। যেমন আমরা জানি, উন্নয়নেরও আব্রু থাকে। তার স্থায়ীত্বের মধ্যে নিপুনশৈলীর মধ্যে। আমরা আব্রু চাই ক্রোধের, আব্রু চাই কথার, ভাষার। আব্রু চাই অনৈতিক অর্থ, বিত্ত, টাকার। আব্রু চাই কুশিক্ষার, আব্রু চাই নারী-পুরুষের সকল উশৃঙ্খল আচরণ ও চিন্তার। আব্রু চাই রাষ্ট্রীয় নোংরা রাজনীতির অপব্যাখ্যার। আব্রু চাই বিভৎসতার, ভয়ের, আব্রু চাই সকল নোংরামির। 

আব্রু চাই না ভালোবাসায়, আব্রু চাই না স্নেহে, আব্রু চাই না বিশ্ব জ্ঞানের, আব্রু চাই না ধর্মের সুরক্ষিত বাণীর, আব্রু চাই না কোন সুন্দরের, আব্রু চাই না সততায়, সভ্যতায়। এমন প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির যেদিন যুগলবন্দি ঘটবে সেইদিন আমরা মাথা উঁচিয়ে সত্যিই বলতে পারবো আমরা দাঁড়িয়েছি, আমরা ভীত গড়েছি, আমরা সামনে যাচ্ছি, আমাদের লক্ষ্যে স্থির রয়েছি, আমরা স্বকীয়তার অনুশীলনে মত্ত রয়েছি।

অনেকটা ঠিক এ জাতীয় বিষয় নিয়েই সেদিন কথা হচ্ছিলো রাস্তার ধারের চলমান আড্ডায়। আমাদেরই এক অগ্রজ অনেকটা সতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করলেন কথায়। তিনি বলে বসলেন, কিসের আব্রু আছে, কোথায়, কার কাছে? কে লেখে এমন কথা কোন পত্রিকা? এখনতো রাস্তায় যত খাম্বা তত পত্রিকা। আর আকাশে যত পাখি ওড়ে মাটিতে তত সাংবাদিক ঘোরে! হয়তো এটা তার রাগের কথা। তবে বোধকরি এমন রাগেরও আব্রু থাকা দরকার। নিজ স্বার্থে এখন প্রতিদিন পত্রিকার নাম প্রকাশ হচ্ছে। কেউ একজন নাম দিচ্ছে সুন্দরবন তো সঙ্গে সঙ্গে অতি প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে বান্দরবন নামটিও। পত্রিকার সংখ্যা গুনতে ক্যালকুলেটর লাগে। এই অবস্থা টিভি চ্যানেলগুলির! কোথায় কখন তারা ক্যামেরা চালিয়ে দিচ্ছে তারও কোন বাদ বিচার নাই। কখনো তারা চিতার ভিতর ধোয়ার গভীরে। কখনো তারা গোরস্থানে লাশের সাথে কবরে। কেন এমনটা হয়? কেন বুঝতে পারি না লাশেরও আব্রু আছে। তাকেও সম্মান করতে হয়। বুঝি না তার কারণ মূলত ঘাটতি রয়েছে আমাদের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার এবং মূল্যোবোধের। একই রাস্তায় পুলিশ সাংবাদিক একজনের নাম্বার প্লেটে প্রেস, অন্যজনের পুলিশ ডিএমপি, বিএম সেই একই রাস্তায় সাধারণের ভুল ধরেন তারা। এখানে নিজেদের একটু আব্রুর মধ্যে কী সংশোধিত করা যায় না? আসলে আমরা সবাই আটকে গেছি ভয়ের কাছে! অভ্যাসের কাছে! অযোগ্যতার কাছে। তাকে আব্রুহীন করা না গেলে তাকে অনাবৃত করে না দিলে নীতি-নৈতিকতা, সত্য-সঠিকতা, বোধ-বুদ্ধি, বিবেক, সব কিছুই প্রতিবন্ধী হয়ে যাবে। সুতরাং নেকাবের, আব্রুর সময়ের পরিসীমা অর্থ এবং বিশ্লেষণ অত্যন্ত জরুরী। এ শুধু কোন বিশেষ জেন্ডারের জন্য প্রযোজ্য নয়। সে ব্যাখ্যা ভুল উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। যে কারণে বারবার এর অর্থ হয়ে দাঁড়ায় একখন্ড বস্ত্রাবৃত মানব বা মানবী।

আব্রু কোন বিশেষ জনগোষ্ঠীর জন্য নির্ধারিত নয়। আব্রু অর্থ মনের পবিত্রতা, দৃষ্টির নান্দনিকতা, আচারের সঠিকতা, চলন বলনের পরিমার্জিকতা। আব্রু মানে সমাজের সর্বত্র দূষণ নিয়ন্ত্রণ। আব্রু মানে অশালীনতাকে হত্যা করা, উদ্যামতাকে পরিশীলিত করা। আব্রু মানে আধুনিকতাকে উলঙ্গ না ভাবা, আব্রু মানে কাউকে অসম্মানিত না করা, আব্রু মানে যথার্থ যোগ্যতার কাছে মাথা নত করা। আব্রু মানে ড্রয়িংরুম এবং বেডরুমের পার্থক্য অনুধাবন করা। আব্রু মানে কিছু চাপিয়ে দেওয়া না, আব্রু মানে জোড় জবরদস্তি না, আব্রু মানে বেসুরে গান গাওয়া না, আব্রু মানে রাজনীতিকে পারিবারিক পেশায় পরিণত করা না। এভাবেই দৈনন্দিন সর্বত্র আব্রুর প্রয়োজন। তবে আব্রু নেকাব, হিজাব এর প্রয়োগিক আঙ্গিকের ভিন্নতা অবশ্যই কাম্য। তা শুধু মাত্র নারীর ক্ষেত্রে যেন সীমাবদ্ধ করে এর অর্থের ব্যাত্যয় না ঘটাই। শুধুমাত্র নারীর বস্ত্রের শালীনতাই আব্রুর এক মাত্র অর্থ নয়। আমরা দেখেছি দিনের পর দিন উন্মুক্ত নারীর উদ্যাম নৃত্যের সঙ্গে পুরুষদের অনিয়ন্ত্রিত আচরণ, যেমন বিড়ি জ্বালাইলে ‘জিগারপে জিয়া জিগারওয়া কেয়া খেয়াল হ্যায়’। ছবির এই গানটির দৃশ্যগুলো যদি কারো স্মরণে থাকে, যদি কারো মনে পরে ছবির সেই গানটি (ও ওহ জানে জানা ঢুন্ডে তুঝে দিওয়ানা... স্বপ্ন মে রোজ আয়ে আ জিন্দিগিমে আনা সানাম) যার সাথে নারী পুরুষদের জ্ঞানহীন অস্থির অভিব্যক্তি।

জানি এ থাকবে আমরা কেউই এর বাইরে নই। এতো এক আদিমতা মানুষের যা চলমান, যা ছিল, আছে, থাকবে। শুধু রূপটি প্রকাশ হওয়া দরকার, যায়গাটি স্পষ্ট করা দরকার। এই যে আমরা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত থাকছি, সময় দিচ্ছি একেবারেই স্বেচ্ছা শ্রমে। সেখানে আমরা কিছু সৃষ্টি করছি কি না, সেই সৃষ্টি ভালো কী মন্দ সে জানে সমাজ রাষ্ট্র। কিন্তু যারা স্বেচ্ছা শ্রমের আদলে প্রফেশনাল বা পেশাদার তাদের আব্রুর প্রয়োজন আছে। তারা একই সময়ে আমাদের সাথে পাছে থাকে সাংস্কৃতির প্রসারে, কিন্তু পরবর্তিতে এ দুয়ার সে দুয়ার থেকে যা গ্রহণ করে তার কোন জবাবদীহিতা থাকে না। এমন কী তা স্বীকার পর্যন্ত করেন না, যে এটাই তাদের রুটিরুজির জায়গা। দ্বন্দ্বতো নেই। শুধু স্বচ্ছ হওয়া, ভিন্নরূপ গ্রহণ করা দরকার। তা না হলে কোনটারই সৃষ্টিশীলতা থাকে না। আমাদেরই এই চটুল আচরণের রূপ উন্মোচিত হওয়া দরকার। এ জাতীয় কর্মের আব্রুর খুব প্রয়োজন। ঘরের মধ্যে স্বাধীনতা বিরোধীর রক্তের বুননে যার বাস, সে ঘরে বাসা বাধেনা বাঙালিত্ব, সেই মুখ যখন স্বার্থের প্রয়োজনে কাউকে স্বাধীনতা বিরোধী বানায় তখন নেকাব তার স্বকীয় অর্থের ছায়ায় তাকেই ঢেকে দিতে চায়। 

সকাল-সন্ধ্যা, দিন-রাত্র, দুপুর কিংবা বিকেল সবই আগের মতোই আছে স্বচ্ছ, স্বাভাবিক। শুধু আমরা হারিয়ে ফেলেছি কর্মের স্বচ্ছতা, পবিত্রতা, যোগ্যতা। তা না হলে মাত্র যেদিন পড়লাম মহামন্য হাইকোর্ট রায় দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে রাস্তায় চলমান সকল যানের হাইড্রলিক হর্ন খুলে স্থানীয় থানায় জমা দিতে। কেউ জমা দেয়নি। আমিও না। যদি এমন হতো, বলা যেত আজ থেকে পুলিশ প্রতিটি হাইড্রলিক হর্ন জব্দের বিনিময়ে ১০০ টাকা পুরষ্কার পাবে। তবে মাত্র একদিন অর্থাৎ চব্বিশ ঘন্টায় রাস্তাতো বটেই, বাড়ির গ্যারাজে থাকা গাড়ির হর্নটাও থানায় জমা হয়ে যেত। 

সুতরাং অন্যকে নয়, নিজেদের খারাপটাকে ঢেকে ফেলি। তা যদি না পারি তবে যেমন গেয়ে চলেছি সবে তেমনই গেয়ে যাব জনমভর ‘নিকলো না বে নেকাব জামানা খাবাব হ্যায়’। আমি না, আমার কর্ম না, আমার দৃষ্টি না, আমার উপলব্ধি না, শুধুই জামানা খারাপ! এই কথাগুলোর আব্রু দরকার, নেকাব দরকার, হিজাব দরকার। তা না হলে মানবের মধ্যের দানবেরা বস্ত্রের দোহাই দিয়ে অনবরত চালিয়ে যাবে ধর্ষণ; সমাজ, সংসার, এবং সর্বপরি কোমলমতি শিশুদের। আর আমরা সেই অসভ্যদের নেকাব, আব্রু না পরিয়ে শুধু গেয়ে যাবো ‘নিকলো না বে নেকাব জামানা খারাব হ্যায়’?

এমন দোষারোপের খেলা আর কত? সব শেষে এমসি কলেজ সিলেটে যা ঘটে গেলো, যা ঘটানো হলো, যে যোগ্যতায় বলিয়ান হয়ে ঘাটালো, যে ঘটনা ঘটলো পাহাড়ে, এবং এখন পর্যন্ত সব শেষ যা ঘটলো নোয়াখালিতে, এমন নির্দয় নিষ্ঠুর ঘটনাবহুল পরম্পরার এখনই নির্মমভাবে লাগাম টানা অত্যন্ত জরুরী। তা যদি না হয় ওরা খুব দ্রুতই ধর্ষিত করবে দেশ, রাষ্ট্র এবং গন্তব্যহীন রাজনীতি। যে উদাহরণ ইতিমধ্যেই মেজর অবঃ  এস কে সিনহাকে গুলি করে খুন করার মাধ্যমে প্রমাণ করেছে ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত গংরা। তার প্রমাণ কেসিনো খেলায় মত্য রাজনীতি। তার প্রমাণ শাহেদের মত  উচ্চাঙ্গ অসভ্যের দম্ভে থর-কম্পমান রাজনীতি আইন ও প্রশাসন। তার প্রমাণ পাপিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত ছবিগুলো। তার প্রমাণ মুজিব কোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। তার প্রমাণ সরবে সর্বত্র ছাত্রলীগের নাম উচ্চারিত হওয়া। তার প্রমাণ ফরিদপুরে ছাত্রলীগ নেতার (হেলমেট বাহিনী) হাজার কোটি টাকার গল্প। তারই প্রমাণ ডা: সাবরিনা। এ সকল ঘটনার নেকাব ইতিমধ্যেই দেশে উন্মোচিত হয়ে গেছে।

শুধু বক্তৃতা আর ‘ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে, প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা’। এমন কথাগুলো অনবরত বলে বলে সার্বিক পরিস্থিতির চরম অবনতি ইতিমধ্যেই সাধিত হয়ে গেছে। এ পথে সম্ভবত সম্মৃর্দ্ধি ও সৃষ্টির সোপান বেয়ে উর্ধ্বলোকের নির্মল আলোর দেখা মিলবে না(?)। দেশ, জাতি বড় লজ্জিত। সর্বত্র সবাই চুপ। এ ভাল নয়! বোধকরি সময় বুঝি খুব দ্রুতই আলো হারাচ্ছে। কাউকেই কিছু বলতে পারছি না। যে যার মত অন্তঃসারশূন্য, লোক দেখানো রাজনীতি করে করে আখের গোছাচ্ছে। এ আলামত আমাদের জন্য ভয়ংকর। ইচ্ছে করছে চিৎকার করে বলি ‘মশালচি লন্ঠন নিয়ে এসো, এখানে খুব অন্ধকার দয়া করে আলো জ্বালো’। ভয়ে ভয়ে  সে কথাও এখন বলতে পারছি না। কারণ ক্ষুব্ধ কেউ এসে যদি বলে ‘কোথায় অন্ধকার, এমন চমৎকার পূর্ণিমায় লন্ঠনের কি প্রয়োজন? এভাবেই সত্য বস্ত্রহীন হচ্ছে প্রতিদিন, নানান হাতে, নানান পথে।