কুকুর অপসারণের প্রতিবাদে বরগুনায় প্রাণী প্রেমীদের মানববন্ধন

রাজধানী থেকে বেওয়ারিশ কুকুর অপসারণ প্রতিবাদে ও জেলার সকল প্রাণীকূলের নিরাপত্তার দাবী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বরগুনা এ্যানিমেল লাভার’স।
শনিবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন,পরিবেশ-প্রাণী ও মানবাধিকার কর্মী ইসতিয়াক আহমেদ মিরাজ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, প্রাণী ও পরিবেশ কর্মী এ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ, বরগুনা এনিমেল লাভার’স গ্রুপের আহ্বায়ক হোসনেয়ারা ছবি, সংবাদকর্মী, মানবধিকার কর্মী মুশফিক আরিফ, পরিবেশ ও প্রাণী অধিকার কর্মী জাহিদ জেহান ও রানা তালুকদার।
বক্তারা বলেন, কুকুর নগর থেকে অপসারণের উদ্যোগ একটি অকার্যকর ও ধ্বংসাত্মক আত্মঘাতী পদক্ষেপ। জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সারা দেশে ২০১৯ সালে ৭০ শতাংশেরও বেশি কুকুরকে এক রাউন্ড জলাতঙ্ক-নিরোধী টীকা দেয়া হয়েছে। এখন অপসারণের ফলে শূন্য হয়ে যাওয়া স্থানগুলোতে পরবর্তী প্রজনন ঋতুতে টীকা না পাওয়া নতুন কুকুর প্রতিস্থাপিত হবে। অনেকের অভিযোগ,রাতের বেলা কুকের হৈচৈ তে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়!কিন্ত কখনো ভেবে দেখেছেন কেন তারা ডাকাডাকি করে ?আপনার এলাকায় অন্য এলাকার সন্দেহজনক মানুষ,চোর ডাকার ঢুকলেই কেবল তারা হৈচৈ করে ।এক অর্থে বলা যায় তারা আপনার পাহারাদার ।
বক্তারা আরও বলেন, প্রজনন ঋতুতে কুকুরের ছোটাছুটি চোখে পরে। বছরের অন্য সময় শান্ত হয়ে শুয়ে-বসে থাকে। তাই এসময় সবার মনে হয় কুকুর অনেক বেড়ে গিয়েছে। কুকুরকে বন্ধ্যা করে দিলে সারাবছর শান্ত থেকে এলাকা পাহারা দিতে পারে।
অথচ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন জলাতঙ্ক টিকা ও বন্ধ্যাত্বকরণ প্রকল্প ঠিকমতো না চালিয়ে ঢাকা থেকে ৩০ হাজার কুকুর শহরের বাইরের বিভিন্ন লোকালয়ে স্থানান্তরিত করতে যে অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে সেটি বেআইনি ।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের নতুন আইনে কুকুর অপসারণ ও নিধন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কুকুর অপসারণ ও নিধন নীতি একে তো অকার্যকর, তার ওপর অমানবিক। আইনের ৭ ধারায় স্পষ্টভাবে লেখা আছে, কুকুর অপসারণ বা নিধন করা যাবে না। শুধু তাই নয়, আইনে লেখা আছে, কোনো প্রাণীকে যদি মারার উদ্দেশ্যে না খাইয়ে রাখে, আঘাত করে বা অন্য জায়গায় ফেলে আসে, সেটাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
কুকুরগুলোকে বন্ধ্যা করার মানবিক সমাধান থাকতেও সিটি করপোরেশন অমানবিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করে কুকুরগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আমরা পরিবেশে সব প্রাণীর সহাবস্থান চাই বলে জোরালো দাবী জানিয়েছেন বক্তারা।