খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে সংগ্রাম করছেন

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে সংগ্রাম করছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে সেই অবস্থায় এসে পৌঁছেছে যে, এখন বেগম খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে সংগ্রাম করছেন। আমাদের এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন তাকে সুস্থ করে তোলার।
‘সুস্থ করে ঘরে পাঠিয়েছিলেন। আবারও তিনি বিভিন্ন রকম অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন। একটা অসুখ তার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বাইরে চিকিৎসা করতে পাঠানোটা জরুরি। ডাক্তাররাই বলছেন, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠালে তিনি সুস্থ হবেন। তারা আশা করছেন সেটা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা উন্নত হাসপাতাল, তারপরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, বেগম জিয়ার চিকিৎসার সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা এখানে নেই। বিদেশে পাঠাতে হবে। আজকে অন্যান্য দলগুলোও এই কথা বলছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের নেত্রী সেটিকে গ্রহণ করছেন না।
অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষা করুন। এর সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আসবেন না।
‘বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রকে এরশাদের হাত থেকে ছিনিয়ে এনেছিল। আজকে সেই গণতন্ত্র পুরোপুরিভাবে হারিয়ে গিয়েছে। আজকে আওয়ামী লীগ ও তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা একটি স্বৈরাচারী সরকারের প্রচণ্ড রকমের দমনপীড়নের ফলে আজকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে।’
ফখরুল বলেন, যে নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য তার সারাটা জীবন অতিবাহিত করলেন। যিনি একজন গৃহবধূ ছিলেন। শুধুমাত্র জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন এবং দেশের পথে প্রান্তরে ছুটে বেরিয়েছিলেন, সেই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আজকে অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে, একটা মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে।
‘তিনি দীর্ঘ আড়াই বছর একটি নির্জন কারাগারে, কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি নিম্নমানের ঘরের মধ্যে ছিলেন। যার ফলে অনেকগুলো ব্যাধি তার মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে কোনো চিকিৎসার সুযোগ ছিল না এবং চিকিৎসা না দেওয়ার ফলে আজকে তার অনেক রোগ দেখা দিয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা সবাই জানি, আমাদের নেত্রী আমাদের হৃদয়ের কত কাছের মানুষ। এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের কত কাছের মানুষ। একজন রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করুন, তিনিও দোয়া করেন যে, আল্লাহ খালেদা জিয়াকে আপনি সুস্থ করে দেন। একজন শ্রমিককে জিজ্ঞেস করুন, তিনিও বলবেন, আল্লাহ খালেদা জিয়াকে আপনি মুক্ত করে দেন। এই নেত্রীকে অপমান করা মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অপমান করা। কারণ ১৯৭১ সালে তিনি গৃহবন্দী ছিলেন।
সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।