গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের আলটিমেটাম, সচিবালয় ঘেরাওয়ের হুমকি

সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের দাবিতে রাজধানীর শ্যামলীতে সড়ক অবরোধ করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা। তারা ঘোষণা দিয়েছেন, রোববার বিকাল ৪টার মধ্যে দাবি পূরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হলে সচিবালয় ঘেরাও করা হবে।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনকারীরা শ্যামলী শিশু মেলা ও আশপাশের সড়ক অবরোধ করেন। এতে মিরপুর রোডের উভয় দিক এবং শ্যামলী থেকে আগারগাঁও সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
এর আগে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে একই দাবিতে তারা সড়ক অবরোধ করেছিলেন।
অবরোধে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে আশপাশের হাসপাতালগামী রোগীরা। পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা জানান, তারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। অনেকেই এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বা বসতবাড়ি বিক্রি করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আন্দোলনরত মনিরুল ইসলাম বলেন, "আমাদের দাবি আদায়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। শেখ হাসিনার আমলের মতোই আমরা বৈষম্যের শিকার। বর্তমান সরকারও আমাদের নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বিকাল ৪টার মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে আমরা সচিবালয় ঘেরাও করব।"
যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ আহত হাসান বলেন, "সরকার বিনামূল্যে চিকিৎসার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে আমরা অবহেলার শিকার। ডাক্তাররা ঠিকমতো চিকিৎসা দেন না। ফলে অনেকে পঙ্গু হয়ে পড়েছেন।"
শাহীন নামে এক আহত ব্যক্তি বলেন, "সঠিক চিকিৎসা পেলে হয়তো আমি পঙ্গু হতাম না। অথচ এখন আমার জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে।"
অবরোধের ফলে দূরপাল্লার যাত্রীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বগুড়ার শেরপুর থেকে আসা ষাটোর্ধ্ব গোলাম আজম বলেন, "ঢাকা মেডিকেলে ভাতিজাকে দেখতে এসেছি। যান চলাচল বন্ধ থাকায় কল্যাণপুর থেকে হেঁটে যেতে বাধ্য হয়েছি।"
একই পরিস্থিতির শিকার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নূর মোহাম্মদ, যিনি ভুল চিকিৎসার কারণে পায়ে ক্ষতের শিকার হয়ে পঙ্গু হাসপাতালে এসেছেন। তিনি বলেন, "পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে সাভার যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু গাড়ি না চলায় বাধ্য হয়ে হাঁটা শুরু করেছি।"
সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবির বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত চাচ্ছেন, নতুবা সচিবালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।