ঘূর্ণিঝড় ‘তকতে’র আঘাতে ভারতে নিহত ২১

ভারতের পশ্চিম উপকূলে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘তকতে’র আঘাতে কমপক্ষে ২১ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছে ৯৬ জন।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুজরাট উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘তকতে’। দুর্বল হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টা এটি তাণ্ডব চালায়।
আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, উপকূলে আঘাত হানার সময় ‘তকতে’র গতিবেগ ছিল ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার যা ঝোড়ো বাতাসের আকারে ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।
ঘূর্ণিঝড় ‘তকতে’র আঘাতে গাছপালা উপড়ে গেছে, মোবাইল টাওয়ার ধসে পড়েছে। এছাড়া খুঁটি উপড়ে বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে হাজার হাজার লোক। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিগত ৩০ বছরের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।
ভারতীয় নৌ-বাহিনী বলছে, মুম্বাই উপকূলে তেল কূপ খননের কাজে নিয়োজিত একটি জাহাজ প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে গেছে। এতে ২৭৩ জন আরোহী ছিল। এদের মধ্যে ৯৬ জন নিখোঁজ রয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, জাহাজ থেকে ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। সমুদ্র পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়া সত্ত্বেও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে মঙ্গলবারও নতুন করে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ জনে।
গুজরাটে ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষার জন্য দুই লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয় এবং কয়েকটি বন্দর ও বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গুজরাটের উপকূলীয় শহর দিউয়ের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১০ ফুট পর্যন্ত বেড়েছিল। সেখানে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩৩ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ে মহারাষ্ট্রেও। এ রাজ্যে কমপক্ষে ছয়জন মারা গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে কমপক্ষে নয়জন। গতকাল সেখানে বৃষ্টি শুরুর পর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে যেসব কোভিড-১৯ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল, তাঁদের ‘নিরাপদ স্থানে’ সরিয়ে নেওয়া হয়।
ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে কেরালা রাজ্যেও। সেখানে মারা গেছে সাতজন। এ রাজ্যে কমপক্ষে দেড় হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।