দুর্নীতির মামলায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ, বিদেশে পালিয়ে গেছেন

দুর্নীতির মামলায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ, বিদেশে পালিয়ে গেছেন

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং তার সহযোগী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ ব্যাংকার চৌধুরী নাফিজ সরাফাত আত্মগোপনে চলে যান। তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি এবং অর্থ লোপাটের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অনুসন্ধানের মাঝেই ২৩ সেপ্টেম্বর সরাফাত তার পরিবারসহ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে-৩৭৩ ফ্লাইটে তার দেশত্যাগের ছবি প্রকাশিত হয়েছে।

সরাফাতের উত্থান শুরু হয় দরবেশখ্যাত সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সম্পর্কের মাধ্যমে। হাসিনার অর্থমন্ত্রী লোটাস কামাল ছিলেন তার ‘পাতানো’ চাচা, এবং হাসিনা নিজে ছিলেন তার ‘পাতানো’ ফুফু। এছাড়া, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে তিনি নিজের চাচাতো ভাই হিসেবে পরিচয় দিতেন। এসব সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে তিনি ব্যবসায় এবং আর্থিক খাতে বিপুল সম্পদ গড়েন।

২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত নাফিজ সরাফাত দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অন্যতম হয়ে ওঠেন। আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তাকে বিপুল সুবিধা এনে দেয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে ৭ জানুয়ারি আদালত তার পরিবারের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন। এর পরেই জানা যায়, তার নামে বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, যার মধ্যে গুলশানে ২০ তলা একটি বিলাসবহুল বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি এবং প্লট রয়েছে।

সরাফাতের স্ত্রী ও ছেলে রাহিবের নামে থাকা সম্পত্তির ক্ষেত্রেও আদালত ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন। সরাফাতের পরিবারের এসব স্থাবর সম্পত্তি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে, যার মধ্যে গুলশান, নিকুঞ্জ, বসুন্ধরা, গাজীপুর এবং বাড্ডার মতো এলাকায় রয়েছে।

চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ১৯৯৯ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে চাকরি শুরু করেন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তার নামে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগ রয়েছে এবং ২০১৮ সালে তাকে পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

এছাড়া তিনি নানা সামাজিক এবং ব্যবসায়িক সংগঠনের সদস্য এবং দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন।