নবগঠিত ছাত্রদলের কমিটি পুণরায় গঠনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
বরিশাল মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ছাত্রদলের নবগঠিত আহবায়ক কমিটি পুনবিবেচনা ও সংশোধন করে সৎ, যোগ্য, ত্যাগী ও মেধাবী কর্মীদের নিয়ে পুণরায় কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার দুপুরে বরিশাল নগরের সদররোডস্থ জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রদল নেতা এ্যালেক্স তমাল সরকার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৭ই জানুয়ারি ছাত্রদলের বহুপ্রতীক্ষিত ১, ৩, ৪, ৫, ৮, ৯, ১১, ১৯, ২১, ২৬, ২৭ নং ওয়ার্ডের আহবায়ক কমিটি ঘোষিত হয়। কমিটিগুলোতে আদর্শিক, যোগ্য, মেধাবী, ত্যাগী ছাত্রনেতাদের অবমূল্যায়নন করা হয়েছে। ১ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিহাদ হাওলাদারকে বিগত দিনে কোন আন্দোলন সংগ্রামে দেখা যায়নি। উল্লেখ্য সে এই কমিটির সদস্য সচিব এস.এম অরাফাত রহমানের চেয়ে প্রায় ৮/১০ বছরের ছোট এবং একাডেমিক জুনিয়ার । আহ্বায়ক জিহাদ হাওলাদার ৫ম শ্রেণি পাশ অথচ সদস্য সচিব এস.এম আরাফাত রহমান মাষ্টার্সে অধ্যয়নরত। ৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আবু তাহের একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম আশিক ওয়ার্ড ছাত্রদলের সম্পূর্ণ অপরিচিত মুখ, ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই । ৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. মাহিন ইসলাম মারুফ সে ছাত্রলীগের এজেন্ট, বিগত দিনে ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রমে তার সরব ভূমিকা ছিল। ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। ৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আশিক হাওলাদার রানা, সদস্য সচিব তারেক রহমান সম্রাটের চেয়ে একাডেমিক জুনিয়র। বিগত দিনে তাকে কোন আন্দোলন সংগ্রামে দেখা যায়নি। ৮ নং ওয়ার্ড ছাএললে আহ্বায়ক আসিফ সিকদার, সদস্য সচিব তামিম হোসেন দুজনই ছাত্রলীগের কর্মী বলে পরিচিত। তারা ওয়ার্ড ছাত্রদলের সম্পূর্ণ অপরিচিত মুখ। ওয়ার্ডের ত্যাগী-নির্যাতিত, মেধাবী ছাত্রনেতাদের বঞ্চিত করে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতির নিজ ওয়ার্ড হওয়ার কারণে সে এই কমিটিতে হস্তক্ষেপ করে এবং ছাত্রলীগ এজেন্ট দ্বারা কমিটি গঠন করে । ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুজন খান একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি, তার ছাত্রত্ব নেই। তার আদৌ কোন একাডেমিক সার্টিফিকেট আছে কিনা তা আমাদের অজানা। বিভিন্ন সময়ে তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক এ্যাকাউন্টে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের পোষ্ট দেখা যায়। ১১ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আজাদ সরদারের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তার বাবা, চাচা, চাচাতো ভাইসহ পরিবারের অনেকেই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। সদস্য সচিব জাকারিয়া হাসান ১১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নয়, তার বাসা ১২নং ওয়াার্ডে। ১৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম সবুজ ঢাকায় বসবাসরত একজন গার্মেন্টস শ্রমিক। সদস্য সচিব নিলয় খান রানা ১৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নয়, তার বাসা নগরীর কাউনিয়া এলাকায় (২নং ওয়ার্ড)। ২১ নং ওয়ার্ডে ছাত্রদলের আহ্বায়ক নোমান ছাত্রলীগ কর্মী বলে পরিচিত।
ওয়ার্ড ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়কদের চেয়ে বয়সে ছোট ও একাডেমিক জুনিয়র। ২৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক নুরে আলম একজন বিবাহিত ব্যক্তি ও এক সন্তানের জনক। ২৭ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক পারভেজ হোসেন পাভেল একজন বিবাহিত ব্যক্তি ও দুই সন্তানের জনক। তিনি একটি ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে কর্মরত। সংবাদ সম্মেলনে অতি সত্ত্বর উক্ত বিতর্কিত কমিটিগুলো পূর্ণ বিবেচনা ও সংশোধন করে সৎ, যোগ্য, ত্যাগী ও মেধাবী কর্মীদের নিয়ে পুণরায় কমিটি গঠনের জোর দাবি জানানো হয়।
এদিকে অভিযোগগুলোর বিষয়ে সঠিত তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হলে সাংগঠনিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় ছাত্রদলের টিম লিডার মাহমুদুল হাসান বাপ্পি।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের মধ্যে রিপন সিকদার, হৃদয় রাজ, মো. সাব্বির শেখ, হামিদুল হাসান রাশিক, তারেক রহমান সম্রাট, জাকির তালুকদার, এস.এম আরাফাত রহমান, মো. মুন, মো. আমান আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।