নিরাপত্তার চাহিদা নাগরিকদের অন্যতম চাহিদা : পুলিশ কমিশনার

নিরাপত্তা চাহিদা নাগরিকদের অন্যতম চাহিদা। এই নিরাপত্তার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রতিমাসের নির্ধারিত দিনে ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত হয়। আপনাদের সমস্যা না হলে এই দিন এসে আমাদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবেন।
রোববার বেলা ১১টায় মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানা ভবনে অনুষ্ঠিত ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তেবে এসব কথা বলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।
এসময় পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, এই ওপেন হাউজ ডে'তে আমরা তিন ধরণের আবেদন গুরুত্ব সহকারে শুনে থাকি; ভুক্তভোগীর কথা শুনি, সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষায় সাধারণ জনগণের গঠনমূলক পরামর্শ শুনি, এমনকি আমাদের কোন পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনিয়ম রয়েছে কিনা তা সরাসরি আপনাদের কাছ থেকে শুনে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। তাই আপনাদের ব্যক্তিগত সমস্যা না থাকলেও এইদিন আপনারা আসবেন, সামগ্রিক মঙ্গলে আমাদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবেন।
তিনি বলেন, পুলিশ একা কোন কাজ করতে পারে না। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের সম্পৃক্ততা, সহযোগিতা না পেলে এখতিয়ারভুক্ত সেবা দানে অনেক ক্ষেত্রে ব্যার্থ হতে হয়। সম্মিলিত উদ্যোগ একটি নিরাপদ নগরী উপহার দেয়া সম্ভব। বিট অফিসার বিট এলাকায় একেকজন সামাজিক নেতা। অপরাধ-বিরোধ সংঘটিত হওয়ার আগেই বেশি বেশি তথ্য আদান-প্রদান করে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে। বিট এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং তথা সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সহায়তায় বিচক্ষণতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রেখে দ্রুততম সময়ে দমন করতে হবে। সামাজিক সমস্যাগুলো সামাজিক প্রক্রিয়ায় সমাধানে ব্যার্থ হলে পরবর্তীতে পরিস্থিতি সমুন্নত রেখে প্রয়োজনীয় আইনশৃঙ্খলা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
পুলিশ কমিশনার বিগত ওপেন হাউজ ডে'তে উপস্থাপিত ভুক্তভোগীদের সমস্যার বিপরীতে গৃহীত পদক্ষেপ পর্যালোচনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সরাসরি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেন। একই সঙ্গে উপস্থিত সকল ভুক্তভোগীর সমস্যা শুনে প্রয়োজনীয়ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) খায়রুল আলম বলেন, ভুক্তভোগীর সেবা ও পুলিশের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ওপেন হাউজ ডে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা জানে না, যাঁরা আসে না, তাদেরকে গিয়ে এবিষয়ে বেশি বেশি অবগত করবেন। মুজিব বর্ষে আমরা সত্যিকার অর্থে মানবিক পুলিশ হতে পেরেছি কি-না তা এই দিনে সরাসরি জানতে পারি। আপনাদের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে থানা এলাকা ভেঙে আমরা বিট পুলিশিং কার্যালয় স্থাপন করেছি। আপনারা আমাদের বেশি বেশি তথ্য দিয়ে পাশে থেকে এলাকায় শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করতে সহায়তা করুন। পুলিশ ও জনগণের অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে পারলে, এই বিট পুলিশিং কার্যাক্রমের আগামী এক থেকে দের বছরের মধ্যে সমাজের যাবতীয় অপরাধ বিষবাষ্প ধংস করে সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ উপহার দেয়া সম্ভব। ভিশন ২০২১ এ আপনাদের সঙ্গে নিয়ে নারী নির্যাতনমুক্ত, হয়রানিমুক্ত, মাদকমুক্ত একটি নিরাপদ নগরী উপহার দিতে চাই।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর বলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে জনগণের যে অটুট বন্ধন তা প্রতিটি ওপেন হাউজ ডে'তে আমরা প্রমাণ পাচ্ছি। পশ্চাতের ভীতি কাটিয়ে ভুক্তভোগী তার সমস্যাগুলো শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যন্ত নিঃসংকোচে জানাতে পারছেন, পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন। যেকোন অভিযোগ অনিয়ম জানাতে বেশি বেশি আসবেন, তথ্য দিবেন।
বিমান বন্দর থানা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার নাসরিন জাহান বলেন, জনগণ এখন অনেক সচেতন। থানায় সেবা পেতে কোন দালাল বা টাকাপয়সা লাগে না। আপনারা যেকোন অভিযোগ অনিয়ম জানাবেন, সমাজের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য দিবেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, বিমান বন্দর থানা পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত শাহ মোহাম্মদ ফয়সাল, পুলিশ পরিদর্শক অপারেশন বিপ্লব, বিমানবন্দর থানার অফিসারবৃন্দ, কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যবৃন্দসহ ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনগণ ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।