প্রচারের শেষ দিনে পাবনায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ

প্রচারের শেষ দিনে পাবনায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ

পাবনা পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারের শেষ দিনে সন্ধ্যায় শহরে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ জানান, সন্ধ্যায় শহরের স্বাধীনতা চত্বরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামালের জনসভা শেষে ফেরার পথে শালগাড়ীয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কয়েকটি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে নৌকা সমর্থিত সাঈদ চেয়ারম্যানের লোকজন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন এতে বাধা দিলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ছুরিকাঘাতসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার পরপরই শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে এবং শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা নারিকেল গাছ মার্কার শালগাড়িয়া গোডাউন মোড়, হাসপাতাল রোডের, বাইপাস এলাকা ও সরদার পাড়ার নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেন। শহরে অতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সব দোকান মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যায়। তারা জানান, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলী মর্তুজা সনি বিশ্বাস ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক জেলা যুবলীগ সভাপতি শরিফ উদ্দিন প্রধানের লোকজন শহরের আব্দুল হামিদ সড়কের দুই দিকে দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। শহরে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে আলী মর্তুজা সনি বিশ্বাস বা তার পক্ষে কারো মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ উদ্দিন প্রধান বলেন, ‘আমরা শুরুর দিন থেকে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে প্রচার চালিয়ে আসছিলাম। কিন্তু নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে শহরের পাশ্ববর্তী ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সন্ত্রাসী আবু সাঈদ আমার চারটি নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে। এ সময় আমার নেতাকর্মীরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমার পক্ষের ১৩/১৪ জন আহত হয়েছে। আমি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পারায় তারা পরিকল্পিতভাবে আমার লোকজনের ওপর হামলা করেছে’।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আহাদ বাবু বলেন, ‘সন্ধ্যায় শহরের মুক্তমঞ্চে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পথসভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পরই এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটে। একজন কেন্দ্রীয় নেতা কী করে দলের নেতাকর্মীদের সশস্ত্র হতে বলেন, তা আমার বোধগম্য নয়’।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, বৃহস্পতবিার বিকালের দিকে শহরে শেষ শোডাউন করেন নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা। মিছিল শেষে তারা শহরের প্রধান সড়ক আব্দুল হামদি রোডের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বরে নির্বাচনী পথসভা করেন। পথসভায় বক্তব্য রাখনে আওয়ামী লীগরে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিমের ছেলে শেখ ফাহিম, ও স্কয়ার গ্রুপের পরচিালক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টুসহ দলরে নেতারা।

তাদের বক্তব্য, এই পথসভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল পাবনা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত করেন। পরে দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিও গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট পাঠানো হয়।

এর আগে দুপুরে শহরে বড় ধরনরে শোডাউন করেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) নারকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী শরিফ উদ্দিন প্রধান।

পাবনা পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। র‌্যাব ও আর্মড পুলিশের পাশাপাশি পৌর এলাকায় চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে’।