ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে ভিন্ন অবস্থানে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রত্যাখ্যানের পরও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের অন্য ‘কোনও উপায় নেই’। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রত্যাখ্যানের পরও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের অন্য ‘কোনও উপায় নেই’। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইসরায়েলের অন্য মিত্র ও ফিলিস্তিন সমর্থক দেশও ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধান’ নিয়ে চিন্তা করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এমন প্রস্তাবের প্রকাশ্য বিরোধিতা করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু বলেছিলেন, জর্ডান নদীর পশ্চিমের সব ভূমির ওপর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে থাকতে হবে।
নেতানিয়াহুর এমন বক্তব্যের পর সংবাদ সম্মেলনে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ইসরায়েলের কাছে এই মুহূর্তে একটি সুযোগ আছে। কারণ এই অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) দেশগুলো ইসরায়েলকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলের দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিশ্চিতের কোনও উপায় নেই এবং গাজা পুনর্গঠন, শাসন প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা প্রদানের স্বল্পমেয়াদি চ্যালেঞ্জ সমাধানেরও কোনও উপায় নেই।
নেতানিয়াহু ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন অবস্থানে ইসরায়েল ও তার সবচেয়ে কট্টর মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতানৈক্যের ইঙ্গিত প্রকাশ পাচ্ছে। নেতানিয়াহু ও তার ডানপন্থি জোট সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে প্রত্যাখ্যান করছে; যদিও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানই দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আনার একমাত্র সম্ভাব্য উপায় হিসেবে দেখেছে ওয়াশিংটন।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে সফর করেন। ইসরায়েলে অবস্থানকালে তিনি বলেছিলেন যে, ইসরায়েলের প্রধান মুসলিম প্রতিবেশী দেশগুলো গাজাকে যুদ্ধের পর পুনর্বাসনে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহায়তা চালিয়ে যাবে যদি শেষ পর্যন্ত একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রতিশ্রুতি আসে।
উল্লেখ্য, অসলো চুক্তির আওতায় মার্কিন মধ্যস্থতায় দখলকৃত ভূখণ্ড নিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আলোচনা প্রায় এক দশক আগে ভেস্তে গেছে মূলত ইসরায়েলের বিরোধিতায়। এই চুক্তির অধীনে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীর শাসনে সীমিত স্বাশসনের সুবিধা পেয়ে আসছে। ২০১৪ সালে চুক্তিটি ভেস্তে পড়ার আগ পর্যন্ত একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসন করছে হামাস।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের পর দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের আহ্বান জোরদার হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নীতি অনুসারে, গাজা ও পশ্চিম তীর নিয়ে একটি রাষ্ট্র গঠিত হবে, যা ইসরায়েলের পাশাপাশি অবস্থান করবে। ইসরায়েল দাবি করে আসছে, ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের নিরস্ত্রীকরণ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে করে তারা দেশটির নিরাপত্তার জন্য হুমকি না হয়।
/এনএআর/