বরিশালে আর কি করব ইশতেহারের মধ্যে সব বর্ণনা দেব

আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত মেয়র প্রার্থী দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির ও নগর সভাপতি মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই)-কে নাগরিক সংবর্ধনা দিয়েছে দলটির সমর্থক ও নেতাকর্মীরা।
এসময় ‘মারামারি নয়, কাটাকাটি নয় বন্ধুত্বসুলভ আচরণের ভিত্তিতে আমরা নির্বাচন করবো। আমরা কেউ কারো প্রতিপক্ষ নয় কেউ কারো শত্রু নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গতকাল সোমবার বিকালে ঢাকা থেকে সড়ক পথে বরিশালে আসেন মেয়র প্রার্থী। এ সময় বরিশাল নগরীর শেষ প্রান্ত গড়িয়ার পাড়ে নেতাকর্মীর ফুল দিয়ে তাকে বরণ করে। পরে সেখান থেকে মোটরসাইকেল শোডাউনের মাধ্যমে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক পথে নগরী প্রদক্ষিণ করে আমতলার মোড় অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন। তবে সংবর্ধনা ও মোটর সাইকেল শোডাউনে ব্যপক ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এসময় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এসময় ফয়জুল করীম বলেন, ‘আপনারা আপনাদের পছন্দের যায়গা থেকে সংবর্ধনা জানিয়েছেন। এজন্য আমি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আমি বিশ্বাস করি, যদি ভোটের শেষ দিন পর্যন্ত আপনাদের এই চেষ্টা অব্যহত থাকে তাহলে অবশ্যই আল্লাহ আমাকে বিজয় করবেন। যদি নির্বাচিত হই, বিগত ৫২ বছরে বরিশালে যে উন্নয়ন হয়েছে; আপনাদের সবার পরামর্শ ভিত্তিতে আমরা তার চেয়ে বেশি উন্নয়ন করার চেষ্টা করব। বরিশালে আর কি করব ইশতেহারের মধ্যে বাকি সব বর্ণনা দেব। ’
তার কেউ শত্রু নয় উল্লেখ করে মেয়র প্রাীর্থী বলেন, ‘আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি আমার কেউ শত্রু নয়। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ সুশীল সমাজ, সাংবাদিক বন্ধুদের নিয়ে আমি এক টেবিলে পরামর্শ ভিত্তিতে নগর চালাবার চেষ্টা করব।’
এসময় বিগত দিনের সিটি মেয়রদের নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিগত দিনে যারা মেয়র ছিলেন, আমি তাদের অভিজ্ঞতা থেকেও; বরিশালের উন্নয়নের জন্য তাদের থেকে বুদ্ধি পরামর্শ গ্রহণ করবো। বিগত দিনে যারা মেয়র ছিলেন, যারা সিটি করপোরেশন পরিচালনা করেছেন, সমস্ত ভাই আমার পরামর্শে এবং আমার পরিষদের একজন করে সদস্য থাকবেন।’
জাতি ভেদাভেদ ভুলে সকলকে ঐক্য করে কাজ করার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, ‘এখানে কি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কে মুসলিম, কে হিন্দু, খ্রিস্টান, আমি কোন ভেদাভেদ করবো না। সবাইকে সম্মিলিতভাবে ঐক্য করে কাজ করব। আমি মনে করি বাংলাদেশের ঐক্য না থাকার কারণে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে না। কমপক্ষে আমি বরিশাল সিটিতে সবার ঐক্যভিত্তিতে একটা মডেল সৃষ্টি করব। বাংলাদেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্য হয়ে উন্নয়ন করার চেষ্টা করে- তাহলে আমরা এখন যা আছি, আগামী পাঁচ বছরে আরো বেশি উন্নয়ন হবে। কাজেই মারামারি নয়, কাটাকাটি নয় বন্ধুত্বসুলভ আচরণের ভিত্তিতে আমরা নির্বাচন করব। আমরা কেউ কারো প্রতিপক্ষ নয় কেউ কারো শত্রু নয়। আমরা সবাই তো দাবি করি এবং বলি বরিশালের উন্নয়ন চাই। সেখানে মারামারি থাকবে কেন? কাটাকাটি থাকবে কেন? হিংসা থাকবে কেন?’
ফয়জুল করীম নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করে বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করবো, সুস্থ গ্রহণযোগ্য এক নির্বাচন দিবেন। কোন অবস্থাতেই কারচুপি করার চেষ্টা করবেন না।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন সংগ্রহকারী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতি সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, বরিশাল মহানগরের সহ-সভাপতি সৈয়দ নাছির আহমদ কাওছার প্রমুখ।
এদিকে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা ও নাগরিক সংবর্ধনা ঘিরে নগরীতে বিপুল পরিমাণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করায় দূরপাল্লার গাড়ি গুলোকে কিছু সময়ের জন্য দুর্ভোগে পোহাতে হয়েছে।