বরিশালে ইজিবাইকের লাইসেন্স নিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার দাবি

বরিশালে ইজিবাইকের লাইসেন্স নিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার দাবি

বরিশালে ইজিবাইকের লাইসেন্স নিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার বেলা ১১টায় নগরের ফকিরবাড়ি রোড এলাকার বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে ইজিবাইকের লাইসেন্স নিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং ব্যাটারিচালিত যানবাহনের খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করে বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্সের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা বাসদ বরিশাল জেলার সদস্যসচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী, জেলা সংগঠক সম্পাদক মানিক হাওলাদার, জেলা সংগঠক গোলাম রসুল, বরিশাল রিকশা-ভ্যান চালক-শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল মল্লিক, সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সংগ্রাম পরিষদের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি শাহীন শরীফ, ২১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ফজলুর, ১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি মো. মানিক, ২২ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক রুবেল হাওলাদার প্রমুখ।

বক্তারা জানান, ব্যাটারিচালিত যানবাহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে গত ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে দায়ের করা দুটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ও ২৫শে এপ্রিল পাঁচজন বিচারকের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মহাসড়ক ছাড়া সর্বত্র ইজিবাইক চলাচলে অনুমতি প্রদান করে। হাইকোর্টের এই রায় সর্বস্তরের ইজিবাইক শ্রমিকদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনলেও একদল কুচক্রী এই রায়কে পুঁজি করে শ্রমিকদের মধ্যে নানা বিভ্রান্তির জন্ম দিচ্ছে।

‘এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে বরিশাল জেলা ও মহানগর ইজিবাইক ও অটোরিকশা শ্রমিক কল্যাণ সংগঠন নামে একটি সংগঠন বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে ইজিবাইকের লাইসেন্স দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করছে।’

বক্তারা বলেন, এই সংগঠন কর্তৃক ও ক্ষমতাসীন দলের কিছু প্রভাবশালী নেতাদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকদের কাছ থেকে লাইসেন্সের বদলে নগদ অর্থ চাওয়ার অভিযোগও শ্রমিকেরা করছে। অথচ বরিশাল সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অদ্যাবধি কোনো ঘোষণায় বা প্রজ্ঞাপনে এই কথা বলা হয়নি এবং লাইসেন্স শাখায় খোঁজ নিলেও কেউ এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

তারা উল্লেখ্য করেন, তথাকথিত কল্যাণ সংগঠনসহ বরিশালের বিভিন্ন এলাকার ক্ষমতাসীন কিছু নেতাদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে বরিশালে বিভিন্ন অঞ্চলে বিট বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

‘ইজিবাইক শ্রমিকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা তোলার কারণে এদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ৯ জন নেতার বিরুদ্ধে ২০২০ সালে ডিসি ট্রাফিক নিজে বাদী হয়ে চাঁদাবাজির মামলা করেছিলেন যা অদ্যাবধি চলমান আছে।’

এ ছাড়া কাশিপুরে ২০২০ সালে ইজিবাইক শ্রমিকদের কাছ থেকে বিট বাণিজ্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে তোলা হয় ও এলাকার প্রভাবশালী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় যেখানে ইতিমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদনে চাঁদাবাজির বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। চৌমাথা এলাকায় ও তদ্রূপ বিট বাণিজ্যে জড়িত প্রভাবশালী একটি মহলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে বরিশালসহ সারা দেশে শ্রমিকেরা লাইসেন্সের দাবিতে আন্দোলনের এক সংগঠিত শক্তিতে পরিণত হয়েছে। শ্রমিকেরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কারণে অনেক কুচক্রী মহল যারা এই শ্রমিকদের জিম্মি করে চাঁদা তুলত তারা এসব অপকর্ম আর করতে পারছে না।