বরিশালে কড়াকড়ির মধ্যেও লকডাউন উপেক্ষার প্রবণতা বাড়ছে

প্রশাসনের কড়াকড়ির পরও বরিশালে লকডাউন উপেক্ষার প্রবণতা বাড়ছে। সোমবার অষ্টম দিনেও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাস্তায় বেড়িয়েছেন প্রচুর সংখ্যক মানুষ।
মুদি এবং ওষুধের দোকান ব্যতিত অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও ক্রমান্বয়ে এই মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলার হিরিক পড়েছে। বিশেষ করে নগরীর বাজার রোডে অপ্রয়োজনীয় এবং কাঠপট্টিতে প্রচুর সংখ্যক ইলেক্ট্রনিক্স দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে। সরকারি নির্দেশ বাস্তবায়নে জেলা প্রশসনের ভ্রাম্যমান আদালত এবং সেনাসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকলেও লকডাউন পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না বরিশালে।
এদিকে জেলা প্রশাসন জনগণের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে নগরীর ৯টি বাজার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠসহ খোলা জায়গায় স্থানান্তর করেছে। গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসন এক গণবিজ্ঞপ্তিতে নগরীর ৯টি বাজার স্থানান্তরের ঘোষণা দেয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই ঘোষনা বলবৎ থাকবে বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
গত ১২ এপ্রিল বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই রোগীর দেহে প্রথমবারের মতো করোনা সনাক্ত হওয়ায় ওইদিন রাতেই নগরীসহ পুরো জেলা লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। প্রথমদিকে মানুষের মধ্যে আইন মান্য করার প্রবণতা থাকলেও আস্তে আস্তে তারা অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছেন। অনেকেই বিনা কারণে রাস্তাঘাটে বেড়িয়ে পড়েন। মুদী এবং ওষুধের দোকান ব্যতিত অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও নগরীর বিভিন্ন স্থানে এই মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখার হিরিক পড়েছে।
গত রোববার এবং গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখায় নগরীর বিভিন্ন স্থানে ২৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। এরপরও গতকাল সোমবার বাজার রোডে সুতার দোকানসহ নানা অপ্রয়োজনীয় দোকান এবং কাটপট্টিতে প্রচুর সংখ্যক ইলেক্ট্রনিক দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে।
এছাড়াও বাজারঘাট, রাস্তা এবং ব্যাংকেও গতকাল অনেক মানুষ দেখা গেছে। রিক্সা, মোটর সাইকেল, বাই সাইকেল এবং ব্যক্তিগত যানবাহনের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। টিসিবি পন্য বিক্রির প্রতিটি পয়েন্টেও ছিলো দীর্ঘ লাইন। এসব স্থানে শারীরিক দূরত্ব অনুসরণের কোন বালাই ছিল না। নগরীর অনেক এলাকায় প্রায় স্বাভাবিক সময়ের মতো চিত্র দেখা গেছে।
দিনের প্রথমভাগে এই চিত্র থাকলেও দুপুরের পর রাস্তাঘাটে মানুষ কমতে থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর অনেকটাই কার্যকর হয় লকডাউন।
এদিকে জনসমাগম রোধ ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে নগরীতে ভ্রাম্যমান আদালত এবং র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি গতকাল সেনা বাহিনীকে টহল দিতে দেখা গেছে।
করোনা এড়াতে জনগণকে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ নিজ ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। জনগণের সুবিধার জন্য নগরীর ৯টি বাজার খোলা জায়গায় এবং বিভিন্ন মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।