বরিশালে ভ্যাপসা গরম, বাড়ছে ডায়রিয়া ও শিশু রোগ

বরিশালে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। গর তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় বাড়ছে গরম। প্রচন্ড গরমে শিশু এবং বয়ষ্কদের দেখা দিচ্ছে নানা উপসর্গ। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগির সেংখ্যা। চিকিৎসকদের পরামর্শ বেশি পানি, স্যালাইন এবং রৌদ্র এড়িয়ে চলা। সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহিঃবিভাগ এবং আন্তঃবিভাগে শিশু রোগী এবং স্বজনদের ভীড়। বহিঃবিভাগে দীর্ঘ সারি। এদের বেশিরভাগ শিশুর জ্বর, চর্ম রোড, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। আন্ত বিভাগে এক সয্যার বিছানায় দুই থেকে তিনজন শিশু রয়েছে। ডায়রিয়া ছাড়াও নিউমোনিয়া, এলার্জি, এ্যাজামার রোগী ভর্তি হচ্ছে। শিশু পুত্রকে নিয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে শারমিন জাহান। তিনি জিানান, হঠাৎ বমি করা শুরু করলে তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাঁর মত অনেক মা-বাবাই শিশু সন্তানকে ভর্তি করেছেন হাসপাতালের শিশু বিভাগে। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. আবদুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, মে মাসে বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৩৬ দশমিক ৭। বাতাসে জলীয়বাষ্প ও আদ্রতার কারণে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। মৌসুমী বায়ু এবং বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত গরম কমবে না। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: এম.আর. তালুকদার মুজিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েকদিনের প্রচন্ড গরমে হাসপালে শিশু রোগির সংখ্যা বেড়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই ভাইরাস আক্রান্ত। তীব্র গরম-ঠান্ডায় (হিট র্যাশ) লাল লাল দাগ, জ্বর, ডায়রিয় আক্রান্ত শিশুই বেশি। এর সঙ্গে গরমে ঘেমে একধরণের অ্যাজমা, পেটে পীড়ায় আক্রান্ত শিশুও রয়েছে। গরমে শিশু নয়, সবারই উচিত বেশি বেশি পানি পান করা। তার সঙ্গে স্যালাইন খাওয়ানো। বাচ্চাদের রোদে বাহির হতে না দেওয়া।’ হাসপাতালের বহিঃবিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: সালেহ্ আল-দ্বীন-বীন-নাসির। তিনি জানান, গরমে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫০ থেকে ৩০০ শিশু নানা সমস্যা নিয়ে আসছে। গতকাল ২৫০ জন শিশু নিবন্ধন করেছে। এদের মধ্যে বড় একটি অংশ নিউমোনিয়া, জ্বর, ডায়রিয়া থাকায় ভর্তি করারো হচ্ছে। পটুয়াখালী জেলার লেবুখালী এলাকা থেকে শিশু নিয়ে এসেছেন রেখা বেগম। তিনি জানান, জ্বরের সঙ্গে ডায়রিয়া হয়েছে। হাসপাতালের বিছানা ফাঁকা নেই। এক বিছানায় তিনজন রাখা হয়েছে। স্বরূপকাঠি থেকে শিশু নিয়ে এসেছে শাহিদা বেগম। তিনি জানান, গরমের কারণে না কি জ্বর হয়েছে। চার দিন আগে হাসপাতারে ভর্তি করা হয়েছে। এখন একটু সুস্থ্য। হঠাৎ জ্বর হওয়ায় ওমর খান নামে দুই বছরের শিশুকে হাসপতালে নিয়ে এসেছেন সদর উপজেলার রাজারচর এলাকার আরজু বেগম। এরকম অনেক শিশুর অভিবাবকরা শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালের শিশু বিভাগের সেবিকা প্রধান জেসমিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গরমের কারণে ২৫০ থেকে ৩০০ শিশু থাকছে ওয়ার্ডে। গতকাল হাসপাতালে ১২২জন শিশু জ্বর, নিউমোনিয়া এবং গরমজনিত কারণে নানা সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছে। স্বাভাবিক সময় রোগীর সংখ্যা ১০০ থেকে ১৫০জনের মধ্যে থাকে।’