বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মারধর, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মারধর, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার সাইদুল আলম লিটনসহ আরো বেশ কয়েক যুবকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করার এই অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের বাড়ি ঘরে হামলা এবং বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ ও ক্যাম্পাসে ভাংচুর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।  

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বিএমপি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সর্বশেষ রাতে পৌনে ১১ টার দিকে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনেন বন্দর থানা পুলিশ।

এ ঘটানার প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্থানীয়দের বাড়ি ঘরে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শেখ রাসেল ক্লাব ও সুকান্ত আবদুল্লাহ পাঠাগারে ভাংচুর করে। পাঠাগারের মধ্যে চেয়ার-টেবিল, বই, জানালাসহ ফ্রেমে বাঁধানো ছবি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এর ছবি ভাংচুর করে ফেলে রাখা হয়েছে। 

এছাড়া স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইদুল আলম লিটন ও তার অনুসারী জয়ের বাড়ি ভাংচুর করে শিক্ষার্থীরা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,  ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী আলামতাজ সায়মা রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দপদপিয়া ব্রীজের নিচে দাঁড়িয়ে তার স্বামীর সাথে কথা বলছিলো। জয় নামের স্থানীয় এলাকার এক ছেলে তার স্বামীর গায়ে হাত তোলে এবং সায়মাকে লাঞ্ছিত করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম আশিক জানান, 'সায়মা এবং তার সাথে থাকা ব্যক্তি সায়মার স্বামী কি না সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। তবে জানা যায় তারা দুজনেই ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী, তাদের মধ্যে ক্যাম্পাসে বসে কথা কাটাকাটি হচ্ছিলো। তখন স্থানীয় এলাকার ছেলে জয় তাদের বাধা দিতে যায়। ঝগড়ার একপর্যায়ে ম্যানেজমেন্টের ছাত্রের গায়ে হাত তোলে। সায়মা তখন জয়কে বাধা দিতে গেলে বিক্ষুব্ধ জয় সায়মাকেও আঘাত করে এবং লাঞ্ছিত করে।'

এ ঘটনার পরপরই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা বরিশাল পটুয়াখালি মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং আন্দোলন শুরু করেন। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. খোরশেদ আলম তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. খোরশেদ আলম বলে, ‘আমাদের ক্যাম্পসের শেখ-হাসিনা হলের শিক্ষার্থী আলামতাজ সায়মা এবং তার স্বামী দোকানে বসে এক সঙ্গে চা খায় এসময় বহিরাগতরা এসে দুইজনের উপর হামলা করে। স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই আহত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন,  'এ ঘটনা ক্যাম্পাসের অনান্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করে। এখন ওরা দুজনেই নিরাপাদে আছে তারা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ইতিমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সথে কথা বলেছি। এ ঘটনায় মামলা হবে।'

নগরীর বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি আমরা নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।