বিএনপির কারাবন্দী নেতাদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে : এমরান সালেহ প্রিন্স

দলের কারাবন্দী নেতাদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
প্রিন্স বলেন, ‘আপনারা জানেন কারাবন্দী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ শীর্ষ নেতারা দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, হৃদরোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। অনেকে একাধিকবার ভয়াবহ করোনা রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বর্তমানে গায়েবি মামলায় কারাবন্দী বয়োজেষ্ঠ্য নেতাদের কারাবন্দী করায় তাদের চিকিৎসায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। কারাগারে তারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা।’
তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাবন্দী করায় বর্তমানে কারাগারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কারাবিধি অনুয়ায়ী অনেক নেতা ডিভিশন পাওয়ার অধিকারী হলেও অনেককে এখনো ডিভিশন দেওয়া হয়নি। কারাবন্দী নেতাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। তাদের ২৪ ঘণ্টা লক-আপে রাখা হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আব্দুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শহীদ উদ্দীন চৌধুরি এ্যানী, ফজলুল হক মিলন, মোস্তাক মিয়াসহ শীর্ষ নেতারা জামিন পাওয়ার অধিকারী হলেও বারবার তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হচ্ছে। তারা গুরুতর অসুস্থ ও বয়োজ্যেষ্ঠ হলেও সরকারের নির্দেশেই তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আমি আবারও বিএনপি মহাসচিবসহ আটক সকল রাজবন্দীর মুক্তি দাবি করছি।’
এ সময় প্রিন্স অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশজুড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন গাজীপুরে মিথ্যা গায়েবি মামলায় কারাবন্দী বিএনপি নেতা আলী আজম খান তার মায়ের মৃত্যুর পর প্যারোলে মুক্তি পেয়ে জানাজার নামাজে অংশ নিতে গেলে তাকে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো হয়। তিনি এজাহারভুক্ত আসামি নন, এমনকি মামলার বাদী আল্লাহর কছম খেয়ে বলেছেন যে, ওই ঘটনার তিনি কিছুই জানেন না। এমনকি এই মামলার বাদীও তিনি নন। পুলিশ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গায়েবি মামলাটি দায়ের করেছে। তিনি কোনো দুর্ধর্ষ খুনের বা জঙ্গি মামলার আসামি নন। বিচারাধীন এ ধরনের একটি গায়েবি মামলার আসামিকে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর ঘটনা বেআইনি, নজিরবিহীন, সংবিধানবিরোধী ও মানবাধিকার পরিপন্থী। সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। সরকারের এ ধরনের ঘৃণ্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি এবং অবিলম্বে আলী আজমের মুক্তি দাবি করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, দপ্তরে সংযুক্ত বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।