বিএনপি’র বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ আজ

বিএনপি’র বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ আজ শুক্রবার। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে সু-চিকিৎসার দাবীতে দেশের সব বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক সমাবেশের অংশ হিসেবে বরিশালে এই বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজন করেছে তারা। এ লক্ষ্যে গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করে ব্যাপক লোক সমাগমের পরিকল্পনা করেছে তারা। এতে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে নেতাকর্মীরা। তবে সমাবেশ বাঁধাগ্রস্থ করতে জেলার গৌরনদী-আগৈলঝাড়া এবং ঝালকাঠীতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তবে শেষ সময়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভেন্যু পরিবর্তন করায় কিছুটা বিপাকে পড়েছে আয়োজকরা।
চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে সু-চিকিৎসার দাবীতে দেশের সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করছে বিএনপি। এই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার দুপুর ২ টায় বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে বরিশাল মহানগর এবং জেলা বিএনপি। বিভাগের অপর ৫টি জেলা ইউনিট কমিটি এই সমাবেশে সহযোগীতা করছে।
আজকের সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকছেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেস্টা ক্যাপ্টেন (অব.) ব্যরিস্টার শাহজাহান ওমর, দলের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার এবং বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন। এছাড়া বিভাগের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপিবৃন্দ এবং স্থানীয় নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।
মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ আয়োজনের অনুমতির জন্য জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছিলো। তারা মৌখিকভাবে জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ আয়োজনের অনুমতি দিয়েছিলো। সে লক্ষ্যে জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ আয়োজনের প্রসআতুতি চলছিলো। হঠাৎ করে গত বুধবার রাতে কোতয়ালী থানার ওসি বিএনপি নেতাদের জানান, জিলা স্কুলে আজ শুক্রবার পরীক্ষা আছে। এ কারনে জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ করা যাবেনা। জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে বান্দ রোডের ঈদগাহ ময়দানে সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়েছে।
মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জানান, জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর সকল জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত সমাবেশ স্থল জানিয়ে দেয়া হয়েছে। শেষ সময়ে ভেন্যু পরিবর্তন করায় এই খবর সকল জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত খবর পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে গত কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রস্তুতি সভা করে বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
দক্ষিন জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফিজ আহমেদ বাবলু জানান, বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে গত ৩০ নভেম্বর দক্ষিন জেলা এবং একই দিন প্রস্তুতি সভা করে বিভাগীয় যুবদল। পহেলা ডিসেম্বর প্রস্তুতি সভা করে মহানগর যুবদল।
এর আগে ২৯ নভেম্বর দলীয় কার্যালয়ে মহানগর বিএনপি এবং ৩০ নভেম্বর উত্তর ও দক্ষিন জেলা বিএনপি পৃথক প্রস্তুতি সভা করে। এছাড়া কৃষক দল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলও পৃথক প্রস্তুতি সভা করে ব্যাপক জনসমাগমের পরিকল্পনা করে।
বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজে নিয়োজিত বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সরকার দলীয়রা মারধর সহ বাঁধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিএনপি’র বরিশাল বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান জানান, বিএনপি’র সমাবেশ সফল করার কাজে নিয়োজিত গৌরনদী-আগৈলঝাড়ার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৮জন নেতাকর্মীকে গত ১ সপ্তাহের মধ্যে মারধর করা হয়েছে। ঝালকাঠীতেও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভাগীয় সমাবেশে না যেতে হুমকী দেয়া হচ্ছে। বিভাগের অন্যান্য স্থানেও সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা বিএনপি’র সমাবেশে জনস্রোত ঠেকাতে নানাভাবে হুমকী ধামকী দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কুদ্দুসুর রহমান।
মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ যাতে সু-শৃঙ্খল ও নিরাপদ হয় পুলিশ বিষয়টি খেয়াল রাখবে এবং সে অনুযায়ী নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেবে। কোন ধরনের বিচ্ছৃংখলা হলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি জানান।