মুলাদীতে উপজেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক কাজী মুরাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

বরিশালের মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদ হোসেন পরকীয়া সম্পর্কের জেরে প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী আছমা খানম লাকীকে নিয়ে পালিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকেই কাজী মুরাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগীরা। তার বিরুদ্ধে সরকারি জমিদখল, যৌন হয়রানি এবং কমিটি বানিজ্যের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী জানায়, মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক কাজী মুরাদ ছাত্রলীগের পদে আসীন হওয়ার পর থেকেই ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অন্যের জমি, নাম প্রকাশ না করার সর্তে একাধীক নারীর সাথে সম্পর্ক এবং ছাত্রলীগের ইউনিয়ন কমিটি গঠনে ব্যাপক বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এসব অপকর্মের অব্যাহত রুপ হিসেবে মুলাদী উপজেলা চরকালেখান ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য প্রবাসীর স্ত্রী আসমা খানম লাকীর সাথে দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া এ লম্পটের চরিত্রের বিষয়টি আসমা খানম লাকী বিয়ের দাবীতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিলেও বিয়ে না করায় সর্বশেষ থানায় নালিশ দেন আসমা খানম লাকী। এর পরপরই ছাত্রলীগ সম্পাদক মুরাদ ফেসে যাওয়ার ভয়ে লাকীকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। ঘটনার পরপরই আসমা খানম লাকীর শ্বশুর আবুল কাশেম তার পুত্রবধু লাকী ও মুরাদের বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনে মুলাদী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
উপজেলা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদ কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে দাপটের সঙ্গে বিভিন্ন অপকর্ম করে গেছে। সম্প্রতি প্রবাসীর স্ত্রী মহিলা ইউপি সদস্যকে ভাগীয়ে নেওয়ার বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পরে বেড়িয়ে আসতে শুরু করে কাজী মুরাদের নানা অপকর্ম। কাজী মুরাদের ফিরিস্তি দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের একাধিক নেতা। উপজেলা সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠে কাজী মুরাদ। এরপরই মুলাদী উপজেলার পাতারচর গ্রামে আশ্রায়ন প্রকল্পের সরকারি জমি দখল করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছু উপজেলা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাধিক নেতা বলেন, ২০১৯ সালে উপজেলার সফিপুর, নাজিরপুর ও বাটামার ইউনিয়নের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে কাজী মুরাদ মোটা অংকের টাকার বিনিময় ছাত্রলীগের ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সুযোগ সন্ধানী জামায়াত-শিবির পরিবারের সদস্যদের প্রাধান্য দিয়ে কমিটি গঠন করেন। অভিযোগ রয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদ হোসেনের অর্থের প্রয়োজন হলেই ডাকা হয় বিভিন্ন ইউনিয়ন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্মেলন। সে সময় এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ আকন, সাইফুল মৃধা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ইমাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ ও সুজন নলী দক্ষিণ বঙ্গের আওয়ামীলীগের অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লার হস্তক্ষেপ কামনা করে গত শুক্রবার আগৈলঝাড়া উপজেলায় তার সাথে সাক্ষাত করে এ অভিযোগের কথা জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার এক বাসিন্দা বলেন, কাজী মুরাদ ও তার অনুসারীদের কারনে স্কুল ও কলেজের মেয়েরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারতো না। কাজী মুরাদ কতো মেয়ের সর্বনাশ করেছে, তার হিসাব নেই বলে জানিয়েছে তারই ঘনিষ্ঠ কর্মীরা। এসব অপকর্মের অব্যাহত রুপ হিসেবে মুলাদী উপজেলা চরকালেখান ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য প্রবাসীর স্ত্রী আসমা খানম লাকীর সাথে দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হন কাজী মুরাদ। দুই সন্তানের জননী ইউপি সদস্য লাকী যখন বুঝতে পাড়ের কাজী মুরাদ তাকে ব্যবহার করছে। তখনই আসমা খানম লাকী বিয়ের দাবীতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েও কোন বিচার পায়না। দিশে হারা লাকী কোন উপায় না পেয়ে থানায় ধর্ষনের অভিযোগ দিতে গেলে নরেচরে বসে কাজী মুরাদ। ধর্ষন মামলা থেকে নিজেকে বাঁচাতে আসমা খানম লাকীকে নিয়ে উধাও হয়ে যান মুরাদ কাজী। ধর্ষন মামলা থেকে রক্ষা পেতে ও দলীয় পদ ধরে রাখতে কাজী মুরাদ গত সোমবার রাতে ভূয়া কাবিন দেখিয়ে লাকিকে বিয়ে করেন। এই বিয়ের ঘটনাটি ইতি মধ্যে তার অনুসারী নেতা কর্মিরা উপজেলায় প্রচার করছে যাতে কিনা ছাত্রলীগের পদটি ধরে রাখা যায়। ঘটনার পরপরই আসমা খানম লাকীর শ্বশুর আবুল কাশেম তার পুত্রবধু লাকী ও মুরাদের বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনে মুলাদী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহীখান জয় বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ন বিষয়। এই বিষয়ে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।