রাত পোহালেই ঈদ

রাত পোহালেই ঈদ
রাত পোহালেই ঈদ। প্রতি বছর কেবল ঈদ পালনের জন্য ৪০ লাখের মতো মানুষ নাড়ীর টানে বাড়ি ফেরে। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল প্রস্তুত ঘর ফেরা মানুষদের নিয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করার জন্য। ঈদে ঘরমুখো মানুষদের স্বাচ্ছন্দে বাড়ি পৌঁছে দিতে লঞ্চ, স্টীমার, বাস মালিকদের বাড়তি ব্যবস্থাপনায় কিছুটা ঝক্কি কমেছে। তবে বেশিরভাগ যাত্রীর পছন্দ নৌপথ। ইতিমধ্যে নৌপথসহ অন্যান্য পথে বাড়ি ফিরেছেন বেশিরভাগ মানুষ। আজো যারা বরিশালে পৌঁছাতে পারেননি তাদের জন্য নৌপথ এবং সড়ক পথে অতিরিক্ত যানবাহন রাখা হয়েছে। লঞ্চ মালিক সমিতি কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, এবার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ কমাতে অতিরিক্ত লঞ্চ দেওয়া হয়েছে। যা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। তাই জনদুর্ভোগ তেমন ছিল না। তা ছাড়া আজ যারা বরিশালে পৌঁছাতে পারেনি তাতের জন্য ডবল ট্রিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারাও বরিশালে এসে ঈদ করতে পারবেন। ঈদে ঘরমুখো মানুষদের নিরাপত্তা দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। এর সঙ্গে নৌনিরাপত্তা বিভাগও সজাগ অবস্থানে আাছে। সোমবার পর্যন্ত কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বাড়ি ফিরেছেন সাধারণ মানুষ। সবাই মিলে স্বচ্ছন্দে ঈদ উপভোগ করতে পারবে এমন আশার কথা জানিয়েছেন বরিশালের বিভাগীয় প্রশান, পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসনসহ সব দপ্তর। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ জানান, এবার নির্বিঘেœ ইদে ঘরমুখো মানুষ বাড়িতে ফিরতে পেরেছে। লঞ্চ, বাসসহ সকল পথে সিটি করপোরেশন আগতদের স্বগত জানাতে বিশেষ ব্যবস্থা করেছে। নদী বন্দরে যাত্রীদের রাতে দুর্ভোগ কমাতে যানবাহনে শৃঙ্খলা আনা হয়েছে। সবমিলে এবার ঘরমুখো মানুষ স্বাচ্ছন্দে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারবে। নগর ভবন থেকে তাদের জন্য সেইধরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা বরিশালে ঈদের নামাজ পড়বেন তাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ঈদের জামাতগুলো। বরিশালে ঈদের প্রধান জামাত হেমায়েতউদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদ গাহ মাঠে সকাল সাড়ে আটটায় অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে মন্ত্রী, মেয়র, সাংসদসহ রাজনৈতিক, পেশাজীবী, সরকারি বেসরকারি কমকর্তাসহ বিশিষ্ট নাগরিকরা ঈদের নামাজ আদায় করবেন। এর বাইরে বরিশাল বিভাগের বৃহত্তর কয়েকটি ঈদ জামাতা অনুষ্ঠিত হবে সদর উপজেলার চরমোনাই দরবার শরীফ মাঠে সকাল সাড়ে ৯টায়। ঝালকাঠীর নেছারাবাদ সালেহিয়া (এন,এইচ) কামিল মাদ্রাসা মাঠে সকাল সাড়ে ৮টায়, পটুয়াখালীর মীর্জাগঞ্জ উপজেলার হযরত ইয়ারউদ্দিন খলিফা (রা.) দরবার শরীফে সকাল সাড়ে ৭টায়, বরিশালের উজিরপুরের গুঠিয়ার বায়তুল আমান মসজিদ কমপ্লেক্স ও ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদ বিনোদনের জন্য বরিশাল মহানগরসহ আশপাশের জেলাগুলোতেও বাড়তি ব্যবস্থা রয়েছে। বরিশাল মহানগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যান, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, স্বাধীনতা পার্ক, ত্রিশগোডাউন এলাকা, প্লানেট ওয়ার্ল্ড শিশু পার্ক নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরের বড় বড় স্থাপনায় আলোকসজ্জা, সড়ক আলপনা করা হয়েছে। সিটি মেয়র বরিশালে ফেরা মানুষদের নির্বিঘেœ বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা তদারকিতে দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। তার সঙ্গে মহানগর ও জেলা পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। মোট কথা পুরো অঞ্চল নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এই কাজে সহযাগিতা দিচ্ছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ গোয়েন্দা সংস্থা। মহানগরেরর বাইরে সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঈদ বিনোদনের ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও স্ব সব এলাকার সাধারণ মানুষ। দুর্গা সাগর এলাকায় ভ্রমণ পিপাষু মানুষদের জন্য রয়েছে বিশেষ আয়োজন। বিভাগের পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুরেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েেেছ বিভাগীয় পুলিশ প্রশাসন। ওইসব জেলার বিনোদন স্থানগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। এ ছাড়া ঈদে ঘরমুখো মানুষদের জন্য বিনোদন স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। পর্যটন পুলিশের পক্ষ থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতেও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে নানাধরণের আনন্দ আয়োজন থাকবে।