লকডাউনে কর্মহীনদের দেয়া নিম্নমানের চাল

লকডাউনে কর্মহীনদের দেয়া নিম্নমানের চাল

লকডাউনে ঝিনাইদহের শৈলকুপা খাদ্যগুদাম থেকে নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পচা চাল নিম্নআয়ের কর্মহীন মানুষের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। বাড়ি নিয়ে দেখা যাচ্ছে চাল পচা, খাওয়ার অনুপযোগী।

শৈলকুপা ওয়াপদা গেটের চা বিক্রেতা কোর্টপাড়ার বাসিন্দা খোরশেদ আলম বাবলু। লকডাউনে নিম্নআয়ের ঘরবন্দির তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে গত বুধবারে উপজেলা প্রশাসন থেকে পেয়েছেন ১০ কেজি চাল ও দুইশ টাকা। চাল পাওয়ার পর তিনি বাড়ি নিয়ে দেখেন, নষ্ট ও খুবই নিম্নমানের চাল দেয়া হয়েছে। ওই চাল বাড়ির কবুতরও খাচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন।

শৈলকুপা শহরের পশু হাসপাতাল রোডের দাসপাড়ার বাসিন্দা বিষু অভিযোগ করেন, তাকেও নষ্ট চাল দেয়া হয়েছে। অভাবে পড়ে নষ্ট চালের ভাত খেতে হচ্ছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকুপায় চা বিক্রেতা ও সেলুনকর্মীদের মধ্যে সরকারি চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়। ওইদিন ৬শ’ নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে চাল বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা। নষ্ট চাল বিতরণের পর এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলেও গুদাম কর্মকর্তা রয়েছেন বহালতবিয়তে।

তবে শৈলকুপা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদ আল রিপন জানান, গত মাসে হরিণাকুন্ড উপজেলা গুদাম থেকে দুইশ’ টন চাল এসেছিল। তার মধ্যে দু-পাঁচ বস্তা নিম্নমানের চাল থাকতে পারে। এ ঘটনায় হরিণাকুন্ডুর ওসিএলএসডি সেলিম রেজাকে প্রত্যাহার করা হয় বলেও তিনি জানান।

এই পচা ও নষ্ট চাল রিসিভ করলেন কেনো- এমন প্রশ্নের কোনো জবাব শৈলকুপার ওসিএলএসডি রিপন দিতে পারেননি।

ঘুষের বিনিময়ে এমন চাল কেনার নজির রয়েছে সরকারি খাদ্যগুদামগুলোতে। বিষয়টি নিয়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা জানান, সরকারিভাবে যে চাল বিতরণ করা হয়, তা সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে আসে। তিনিও এমন অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান।

ইউএনও জানান, তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, ৩০-৪০ বস্তা এমন নষ্ট চাল এসেছিল। এরপর বাকি চাল বিতরণ তিনি বন্ধ করে দেন। গুদাম থেকে দেয়ার সময় দেখে দেয়া উচিত ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে যারা এমন নিম্নমানের চাল পেয়েছেন তাদের পুনরায় চাল দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

লকডাউনে নিম্নমানের চাল বিতরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঝিনাইদহ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার বাগচী। তিনি বলেন, যেসব কর্মকর্তা এমন নিম্নমানের চাল সরকারি গুদামে ক্রয় করেন, তাদের শাস্তি হওয়া উচিৎ। প্রধানমন্ত্রীর উপহারে নষ্ট চাল দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।