লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়া, দ্রুত বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ

লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়া, দ্রুত বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ

১৭, ১৮ নভেম্বরের পর আবারও তৃতীয় দফায় রক্তক্ষরণ হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। তার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘শেষ ২৪ ঘণ্টায় তার ব্লিডিং হয়নি। আবার এমন অবস্থা সৃষ্টি হলে ‘বিশেষ পরিস্থিতি’ সৃষ্টি হতে পারে। সে কারণে স্ট্যাবল অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা জার্মানিতে উন্নত চিকিৎসা দরকার। এসব রোগীর ফেইলর হলে লাইফ সেভ কীভাবে করা হয়, তার চিকিৎসা সেখানে সম্ভব।’

রবিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটায় রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের বাসভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন এসব বিষয় তুলে ধরেন তার প্রধান চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী (এফএম সিদ্দিকী)। এ সময় তিনি জানান, চিকিৎসকরা হেল্পলেস ফিল করছেন। সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক দলের সদস্য একিউএম মহসীন, শামসুল আরেফিন, মোহাম্মদ নুরুদ্দীন,  ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডা. আল মামুন উপস্থিত ছিলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে ডা. এফএম সিদ্দিকী বলেন, ‘নেক্সট উইকে ফিফটি পারসেন্ট, নেক্সট সিক্স উইকে সেভেনটি পারসেন্ট এবং এরপর যদি আল্লাহ না করুন এটা একটা অবভিয়াস ব্যাপার ঘটতে যাচ্ছে। আমরা যা করছি, তা সমস্ত সম্ভাবনার শেষটুকু দিয়ে। যেটা এই উপমহাদেশে নাই। যতবার তিনি আক্রান্ত হচ্ছেন, কেন যেন তিনি একেবারে তার সিরিয়াসনেসটা ডেথ পয়েন্টে চলে যাচ্ছে। এর আগে তিনি চেস্ট টিউব নিয়ে ১৭ দিন কাটিয়েছেন। প্রতিদিন উনার ফ্লুইড বের হয়ে এসেছে। প্রতিদিন উনি নিজের চোখে ব্লাড দেখছেন। এন্ডলেস এটা সিচুয়েশন, সেখান থেকেও কিন্তু আমরা কনফিডেন্টলি বের হয়ে এসেছি।’

‘খালেদা জিয়ার মনোবল অনেক দৃঢ়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের যথেষ্ট বিশ্বাস করেন বিধায়, এছাড়া আমাদের আর কিছু করার উপায় নেই। আল্লাহর রহমতে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে এসেছি। দ্যা টাইম উই ওয়্যার কনফিডেন্ট, কিন্তু দিস টাইম আমরা কিন্তু হেল্পলেস ফিল করছি।’

ডা. জাহিদ হোসেন জানান, ‘বর্তমানে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য মিলিয়ে অন্তত ১৭ থেকে ২৩ জনের মেডিক্যাল টিম কাজ করছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা বোর্ডে।’ 

এর আগে, গত ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ারে ভর্তি করানোর পর সেদিন রাতেই সিসিইউ’তে নিতে হয় খালেদা জিয়াকে। ১২ অক্টোবর এভারকেয়ার হাসপাতালে ২৭ দিন চিকিৎসা শেষে ১৩ নভেম্বর/// সন্ধ্যায় বাসায় ফেরেন তিনি। যদিও মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানেই আবারও এভার কেয়ারে যেতে হয় তাকে। ক্রমে তার শরীর খারাপ হতে থাকলে ১৮ নভেম্বর চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। যে কারণে সেদিনই বিএনপির পক্ষ থেকে জরুরিভাবে তাকে পরিবারের আবেদন অনুযায়ী বিদেশে পাঠানোর দাবি করা হয় এবং ২১ নভেম্বর কর্মসূচি দেয় বিএনপি। 

১৮ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চিকিৎসকদের আশঙ্কা—সময়োপযোগী সঠিক ও উন্নত চিকিৎসা না পেলে তিনি এমন এক জায়গায় উপনীত হবেন, যখন কোনও চিকিৎসা আর কাজে আসবে না।’ ২৩ নভেম্বর মির্জা ফখরুল জানান, বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে নেওয়ার বিকল্প নেই। সেদিন সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি অবনতিশীল ছিল।