সিলেটের এমসি কলেজে ধর্ষণের ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করে দিয়েছেন আদালত। সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, মুখ্য মহানগর হাকিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককের (সাধারণ) সমন্বয়ে গঠিত এ তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রাতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনার পর ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার প্রশ্ন তুলে ব্যবস্থা নিতে রোববার হাইকোর্টে আবেদন করেন এক আইনজীবী। এরপর মঙ্গলবার বিচাপতি মজিবুর রহমান মিঞা ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এছাড়াও কলেজ ক্যাম্পাসে সাধারণের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থতায় এমসি কলেজ অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে রুলও জারি করেছেন আদালত।
ছাত্রাবাসে ধর্ষণের অনেক পরে এমসি কলেজ কর্তৃপক্ষের ঘটনাস্থলে যাওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি আইওয়াশ বলেও মন্তব্য করেছে আদালত। একইসঙ্গে মামলায় কোনো গাফিলতি হলে হাইকোর্ট ব্যবস্থা নেবে বলেও হুঁশিয়ার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে ১৮ অক্টোবর।
আদালত জানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তরুণী ধর্ষণের ঘটনা জাতির জন্য লজ্জাজনক। সংবিধানে অবাধে চলাচলে নিশ্চয়তা দেয়ার পরও কলেজ ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনা বিকৃত মানসিকতা এবং নিষ্ঠুরতার সামিল। কলেজ ক্যাম্পাসে অতর্কিত একজন নারীর ওপর পশুর মতো ঝাপিয়ে পড়া জাতির জন্য চরম লজ্জাজনক।
এদিকে এ ঘটনায় এমসি কলেজর দুই দারোয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষও তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। ছাত্রলীগের নয়জন কর্মী ওই নারীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরদিন তরুণীর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। অন্য আসামিরা হলেন এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, অর্জুন লস্কর ও বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী রবিউল এবং তারেক আহমদ। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকেও আসামি করা হয়েছে।
এই মামলায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে ছয় আসামির ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান আসামি মো. আইনুদ্দিন (২৬) ও রাজন মিয়ার (২৭) পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এর আগে সোমবার একই আদালত গ্রেপ্তার তিন আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলামের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।