২০২৪ সালে বাংলাদেশি কর্মীদের বিদেশ গমন ২৭% কমেছে, নারীদের অংশগ্রহণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি

২০২৪ সালে বাংলাদেশি কর্মীদের বিদেশ গমন ২৭% কমেছে, নারীদের অংশগ্রহণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি

২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ২৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। গত বছর মোট ১০ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ জন কর্মী বিদেশে গিয়েছেন, যা ২০২৩ সালের ১৩ লাখ ৯০ হাজার ৮১১ জনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

ডিজিটাল অভিবাসন প্ল্যাটফর্ম আমি প্রবাসী’-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। তবে এই নিম্নগামী প্রবণতার মধ্যেও একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে—নারী কর্মীদের বিএমইটি (বাংলাদেশ ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং) নিবন্ধন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে নারী নিবন্ধনের হার দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২৪ সালে সৌদি আরব ছিল বাংলাদেশি কর্মীদের প্রধান গন্তব্য, যেখানে মোট কর্মীদের ৬২% গিয়েছেন। সৌদি আরবে অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকের চাহিদা থাকায় এটি শীর্ষ গন্তব্য হিসেবে রয়ে গেছে।

তবে, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ কমে গেছে। ২০২৪ সালে ৯৩ হাজার বাংলাদেশি কর্মী সেখানে গিয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। ‘আমি প্রবাসী’র প্রতিবেদন অনুসারে, মালয়েশিয়ার নতুন শ্রমনীতি এই হ্রাসের মূল কারণ।

অভিবাসন কমে যাওয়ার পেছনে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন কারণ রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক পরিবর্তন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থির করে তুলেছে, যা বিদেশগামী কর্মীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

এছাড়া, দক্ষ কর্মী তৈরির ক্ষেত্রে ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে। ২০২৪ সালে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে ভর্তির সংখ্যা ১ লাখ ১২ হাজার ১৬৬-এ নেমে এসেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ২ লাখ ৩৬ হাজার ২৭০।

২০২৪ সালে বিএমইটি নিবন্ধিত কর্মীর সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৭৬, যা ২০২৩ সালের ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৮-এর তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশেষত, নারী কর্মীদের নিবন্ধন হার ২০২৩ সালের ২.৭৮% থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে ৪.৭৯%-এ পৌঁছেছে। ‘আমি প্রবাসী’র প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক ই হক বলেন,

“নারীদের বিএমইটি নিবন্ধনের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রমাণ করে যে, তারা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার গড়তে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন। এটি শ্রমবাজারে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।”