৭০ বছর পর নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

৭০ বছর পর নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

প্রায় সত্তর বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে কোনো ফেডারেল নারী বন্দীর মৃত্যুদ- কার্যকর হয়েছে। একাধিক মানবাধিকার সংস্থার আপত্তি থাকলেও তা আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

বিবিসি জানায়, গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে দেড়টার পরই ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের টেরে হাউটের কারাগারে প্রাণনাশক ইনজেকশন প্রয়োগ করে লিসা মন্টগোমেরি নামে ওই নারীর মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।

২০০৪ সালে মিসৌরিতে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিলেন লিসা। এরপর পেট কেটে বাচ্চাকে বের করে নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় ফেডারেল আদালত লিসাকে মৃত্যুদ- দিয়েছিল।
গতকাল বুধবার মৃত্যুদ- কার্যকরের সময় লিসার ঠিক পেছনে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, শেষ কিছু বলার আছে কী না? কিন্তু লিসার উত্তর ছিল, না; মানে কিছুই বলার নেই।

লিসার আইনজীবী কেলি হেনরি বলেন, ‘এই মৃত্যুদ- কার্যকরে যারাই অংশ নিয়েছেন তাদের সবাই লজ্জা পাওয়া উচিত।’

এক বিবৃতি তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত একজন নারীকে মৃত্যু থেকে বাঁচানোর জন্য সরকার কিছুই করেনি। লিসা মন্টগোমেরির মৃত্যুদ- ন্যায়বিচারের ধারেকাছে ছিল না।’
লিসার মৃত্যুদ- কার্যকর দুইবার পিছিয়ে দেওয়া হয়। একবার করোনার কারণে আরেকবার শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে দিয়েছিলেন এক বিচারক। লিসার মানসিক অবস্থা নিয়ে নতুন শুনানির আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী।

লিসার পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীর দাবি, ছোটবেলায় বাবা কর্তৃক বারবার যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন লিসা। এ ছাড়া মা তাকে অপহরণ করেছিলেন। ফলে অল্প বয়স থেকেই মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ছিলেন তিনি।   

অন্যদিকে নিহতের শিকার তরুণীর পরিবার ও বন্ধুরা জানাচ্ছেন, এই হত্যাকা- এতটা ভয়াবহ ছিল যে, মানসিক স্বাস্থ্য বিবেচনা নির্বিশেষে লিসার মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়া উচিত।

শেষপর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে লিসার মৃত্যুদ- কার্যকর হয়। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবিও আমলে নেয়নি আদালত। ফলে ৬৭ বছর পর আবার কোনো নারীর মৃত্যুদ- কার্যকর হলো যুক্তরাষ্ট্রে।
১৯৫৩ সালে সর্বশেষ কোনো নারীর মৃত্যুদ- কার্যকর করেছিল মার্কিন সরকার। বনি হেডি নামে ওই বন্দীকে মিসৌরিতে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মৃত্যুদ- দেয়া হয়।

ব্রান্ডন বারনার্ড নামে এক বন্দীরও ডিসেম্বরে মৃত্যুদ- কার্যকরের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৯৯৯ সালে দুই যুব মন্ত্রীকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন ওই ব্যক্তি।