‘আমরা যেন টেস্টের এক নম্বর হয়ে গেছি’

ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ইতিহাস পাল্টেছে বাংলাদেশ। সুযোগ ছিল টেস্টেও নতুন ইতিহাস লেখার। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবের পাশাপাশি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত টেস্টের পুরনো পরিসংখ্যানেই ব্র্যাকেটবন্দি হয়ে থাকতে হলো বাংলাদেশকে। ডারবানে কিছুটা লড়াই করলেও পোর্ট এলিজাবেথে বিন্দুমাত্র লড়তে পারেনি। কেন পারেনি বাংলাদেশ, এই প্রশ্নে বরং পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক।
সোমবার দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শেষে মুমিনুল সংবাদ সম্মেলনে অসহায় আত্মসমর্পণের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘লড়াই করতে না পারার ব্যাখ্যা একটাই- আমরা খুব বাজে ব্যাটিং করেছি। এটাই, আর কোনও কিছুই নেই। আমার মনে হয়, আমরা খুব বাজে ব্যাটিং করেছি।’
পাশাপাশি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে না পারাকেও সামনে আনেলেন টেস্টের অধিনায়ক, ‘আমার মনে হয়, আমাদের বাস্তবায়নে ভুল ছিল। আপনি যদি প্রথম থেকে দেখেন, দুয়েকটা আউট ছিল যেখানে হয়তো করার কিছু ছিল না। কয়েকটা আউট ছিল, যেখানে আমরা বাস্তবায়নে ভুল করেছিলাম। বাস্তবায়নে ভুল হলেই কাজ কঠিন হয়ে যায়। আর এমন না যে, এমন স্পিনিং উইকেটে এর আগে খেলিনি। যেসব জায়গায় বল ঘুরে, সে সব জায়গায় স্কয়ার অব দ্য উইকেটে খেলা ভালো। এই জায়গায় বাস্তবায়নে একটু ভুল ছিল, যেটা আমার মনে হয়।’
অভিজ্ঞ ও শক্তিমত্তায় প্রোটিয়াদের বর্তমান দলটির চেয়ে ঢের এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। আইপিএলের কারণে কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদিসহ মোট ছয়জন টেস্ট সিরিজে ছিলেন না। তারপরও এই দলটির সঙ্গে নাকানিচুবানি খেয়েছে বাংলাদেশ। এমন ব্যর্থতায় হতাশ মুমিনুল নিজেও, ‘অধিনায়ক হিসেবে এটা হতাশাজনক। ওদের দলের অনেক মূল খেলোয়াড় নেই। আমার মনে হয়, আমাদের সুযোগ ছিল ভালো, একটা টেস্ট ম্যাচ জেতার। ওই সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। প্রতিপক্ষ দলে অনেক মূল খেলোয়াড় ছিল না। সুযোগগুলো কাজে লাগানো উচিত ছিল।’
দক্ষিণ আফ্রিকার ‘খর্বশক্তির’ এই দলটির বিপক্ষে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে কোথাও উন্নতির ছাপ রাখতে পারেনি বাংলাদেশ দল। অথচ চলতি মাসের শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ঐতিহাসিক টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ। এমন একটি টেস্ট জয়ের পর এবারের পারফরম্যান্স হতাশজনক। মুমিনুল সেটা স্বীকারও করছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট এমন একটা খেলা যেখানে আপনাকে প্রতিদিন উন্নতি করতে হবে দলগতভাবে। আপনি এক সেশন ভালো খেললে হবে না, আবার পাঁচদিনের মধ্যে তিন দিন ভালো খেললেও হবে না। আপনার পাঁচ দিনে পাঁচ দিন ভালো খেলতে হবে।
বাংলাদেশ কেন ভালো করতে পারেনি? উত্তরে মুমিনুল বরং পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লেন, ‘আপনারা এমনভাবে বলছেন যেন আমরা একটা টেস্ট ম্যাচ জিতে বিশ্বের এক নম্বর দল হয়ে গেছি। আমার একটা টেস্ট জিতে আগেও যেখানে ছিলাম এখনও সেখানে আছি। হয়তো আপনাদের প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল। আমাদের নিজেদেরও হয়তো বাড়ছে। আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে।’