অবাধ ও সঠিক তথ্য প্রবাহ সুশাসনের পূর্বশর্ত

অবাধ ও সঠিক তথ্য প্রবাহ সুশাসনের পূর্বশর্ত

অবাধ ও সঠিক তথ্য প্রবাহ হচ্ছে সুশাসনের পূর্ব শর্ত বলে মনে করে বরিশালে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস।তথ্য আমার অধিকার, জানা আছে কি সবার প্রতিপাদ্য বিষয়ের আলোকে তথ্য আমার অধিকার, জানতে হবে সবার স্লোগানকে সামনে রেখে বরিশাল বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন দিবসটি পালন করে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় শোভাযাত্রা শেষে বরিশাল সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা। সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-টিআইবি দিবসটি আয়োজনে সহযোগিতা করে।

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো: আব্দুর রাজ্জাক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো: শাহাবুদ্দিন খান, উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো: শহীদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রকিবুর রহমান খান, জেলা তথ্য কর্মকর্তা জাকির হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো: ইউনুস বীর মুক্তিযোদ্ধা কেএসএ মহিউদ্দিন মানিক (বীর প্রতীক), সচেতন নাগরিক কমিটি বরিশালের সভাপতি প্রফেসর শাহ্ সাজেদা, সদস্য  শুভংকর চক্রবর্তী।

সনাক সভাপতি তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সার্বজনীন তথ্যে অভিগম্যতা দিবস ২০২১ উপলক্ষ্যে টিআইবি’র ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার ও সরকারের গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা নিশ্চিতে তথ্য গোপন অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিবন্ধক। তাই আন্তর্জাতিক সার্বজনীন তথ্যে অভিগম্যতা দিবস ২০২১ উপলক্ষে টিআইবির আহ্বান হচ্ছে
অতিমারির এই সময়ে কার্যকর ও নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিতে কার্যকর নীতি কৌশল জরুরি ভিত্তিতে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; তথ্য প্রকাশ এবং তথ্যে অভিগম্যতার সুবিধার্থে ডিজিটাল টুলসের ব্যবহার বৃদ্ধিতে মনোযোগী হতে হবে; তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর পরিপন্থ’ী বিদ্যমান আইনসমূহ সংস্কার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাতিল করতে হবে, যেমনÑ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ৩২ ধারাসহ বাক্স্বাধীনতার পরিপন্থী অন্যান্য ধারা; নতুন কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তথ্য অধিকারের মূল চেতনার পরিপন্থী বা আইনটির কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো ধারা যাতে সংযোজিত না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে; এক যুগের অভিজ্ঞতার আলোকে তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হবে; যেমনÑ ব্যতিক্রম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ক্ষেত্রসমূহে জনস্বার্থের প্রাধান্যের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে; তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯Ñ এর আত্ততায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; তথ্য ফরম পূরণের আবশ্যকতা হিসেবে তথ্য কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করার বিধান বাদ দিতে হবে; তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিধান করতে হবে; দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জ্ঞান ও তথ্য প্রদানে প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা অর্জনে বিভিন্ন কারিগরি ও অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে; তথ্য অধিকার আইনের অধিকতর বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রমে সুশীল সমাজ, জনগণ ও গণমাধ্যমের কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে; প্রাতিষ্ঠানিক স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের কার্যকরতা বৃদ্ধিতে তথ্য কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে; তথ্য প্রকাশ ও প্রচারে প্রতিষ্ঠানসমূহের দক্ষতা ও সংগতি পর্যবেক্ষণের জন্য তথ্য কমিশনের ক্ষমতা ও তদারকি বাড়াতে হবে। তদারকি কার্যক্রমে নাগরিক সমাজ ও জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। সর্বোপরি, তথ্য অধিকার নিশ্চিতে গণমাধ্যমকে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ, সুশীল সমাজ, তথ্য কমিশন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট  সমাপ্তি রায় এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো অংশগ্রহণ করেন বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, টিআইবি’র সনাক, স্বজন, ইয়েস ও ইয়েস ফ্রেন্ডস্ গ্রুপের বিভিন্ন সদস্য।