আজ উজিরপুর ও বাকেরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন: ইভিএমে ভোট হলেও বিরোধী প্রার্থীরা শংকায়

আজ সোমবার বরিশালের দুই পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই পৌরসভায় সাধারণ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ভোট নিয়ে স্থানীয় জনগণের আগ্রহ থাকলেও মেয়র পদে বিগত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি নিয়ে শংকিত তারা। এবারই প্রথম দুই পৌরসভায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে দুই পৌরসভায় সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে ভোট গ্রহণের যাবতীয় ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
৬ দশমিক ২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বাকেরগঞ্জ পৌরসভায় এবার মেয়র প্রার্থী ৩জন। আওয়ামী লীগের লোকমান হোসেন ডাকুয়া, বিএনপির এসএম মনিরুজ্জামান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা খলিলুর রহমান। অপরদিকে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ২৯ জন এবং ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
বাকেরগঞ্জ পৌরসভায় মোট ভোটার ১৫ হাজার ৩০৪জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৬৭০জন এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ৬৩৪ জন। ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি কেন্দ্রের ৪৯টি বুথে (ভোট কক্ষ) ভোট দিয়ে পরবর্তী মেয়র নির্বাচিত করবেন তারা।
নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত বাকেরগঞ্জে কোন ধরণের নির্বাচনী সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
বাকেরগঞ্জে বিএনপি প্রার্থীর সমন্বয়কারী আতাউর রহমান রোমান জানান, এখন পর্যন্ত (গতকাল বিকেল) কোন হামলা বা হুমকীর শিকার হননি। তবে নির্বাচনের আগের রাতে বা ভোট গ্রহণের দিন সকালে কি পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বিএনপি প্রার্থী এসএম মনিরুজ্জামান।
বাকেরগঞ্জে ভোটের সুষ্ঠু পরিস্থিতি থাকলেও উজিরপুর পৌরসভায় গত রোববার রাত থেকে ক্ষমতাসীনরা বিএনপি কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেন্দ্রের ধারে কাছে না যেতে হুমকী-ধামকী দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী শহিদুল ইসলাম খান। তবে কোন হুমকী-ধামকী না পেলেও পোষ্টার ছেড়ার অভিযোগ করেছেন উজিরপুর পৌরসভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী কাজী শহিদুল ইসলাম।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী কাজী শহিদুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ভালো। তবে রাতে কিংবা পরদিন ভোটের কি পরিস্থিতিতে ভোট হবে তা নিয়ে দুচিন্তা রয়েছে।
৬ দশমিক ২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উজিরপুর পৌরসভার দ্বিতীয় নির্বাচন। এখানে মোট ভোটার ১১ হাজার ৯২৪জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ৯৮৮জন এবং নারী ভোটার ৫ হাজার ৯৩৭জন। ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি কেন্দ্রে ৪১টি কক্ষে (বুথ) ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেবেন তারা। এখানে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বেপারী, বিএনপি’র শহিদুল ইসলাম খান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী কাজী শহিদুল ইসলাম। এই পৌরসভায় ৯টি সাধারণন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৪ জন এবং ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী ৯জন।
পৌরসভা নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম বলেন, দুটি পৌরসভায় প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে ভোটের যাবতীয় সরঞ্জাম কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরামহীন ভোট গ্রহণ করা হবে। সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং একেকটি পৌরসভার জন্য একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৭জন পুলিশ, কেন্দ্রের বাইরে মোবাইল টিমে ৮জন পুলিশ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক পৌরসভায় ২ প্লাটুন বিজিবি এবং র্যাবের ৩টি করে টিম সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করবে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা।