আমতলীতে আইন অমান্য করে ঘনবসতিপূর্ন এলাকায় হলুদ মরিচ ভাঙ্গানোর মিল

বরগুনার আমতলী পৌরশহরের ০৩নং ওয়ার্ড (বটতলা) এলাকায় পরিবেশ আইন অমান্য করে ঘনবসতিপূর্ন এলাকায় হলুদ মরিচ ভাংগানোর মিল স্থাপন করার কারনে ভোগান্তিতে পরেছে শিক্ষার্থীসহ পথচারী ও সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে,আমতলী নতুন বাজার বটতলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন জনবহুল ঘনবসতিপূর্ন এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে ব্যক্তি মালিকানায় বেশ কয়েকটি হলুদ ও মরিচ ভাংগানোর মিল স্থাপন করা হয়েছে। সোহরাফ, আলাল ও খালেক আকনের মালিকানাধীন মিলে প্রকাশ্য রাস্তার পাশে বসে হলুদ মরিচ ভাঙ্গানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই এলাকাটি জনবসতিপূর্ন, দূরপাল্লার বাসের সকল কাউন্টার ও অভ্যান্তরিন রুটে চলাচলরত ভাড়ায় চালিত একটি মোটর সাইকেল ষ্ট্যান্ড রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ পৌর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পথচারীরা প্রতিনিয়ত ওই (বটতলা) এলাকা দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন।
একটি জনবহুল ও ঘনবসতিপূর্ন এলাকায় পরিবেশের তোয়াক্কা না করে ব্যক্তি মালিকানায় হলুদ মরিচের মিল স্থাপন করায় প্রতিদিন ওই এলাকা (বটতলা) দিয়ে চলাচলরতদের মিলে ভাঙ্গা হলুদ মরিচের গন্ধে হাঁচি কাশি ও বিভিন্ন ধরনের রোঁগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে বাদ যাচ্ছে না শিশু, বৃদ্ব, কোমলমতি শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী এবং পথচারীরা।
আমতলী সরকারী একে পাইলট হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, প্রতিদিন হলুদ মরিচ ভাঙ্গার গন্ধ নাকে নিয়ে বটতলা এলাকা পার হয়ে আমার মত অনেক শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে হচ্ছে। হলুদ মরিচ ভাঙ্গার গন্ধে হাত ও মুখমন্ডল অনেক জ্বালাতন করে এবং অনেক হাচি কাঁশি পায়।
ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক সোলায়মান মিয়া বলেন, হলুদ মরিচ ভাঙ্গার গন্ধ শুকতে শুকতে আমাদের এখন সয়ে গেছে। প্রথম দিকে সর্দ্বি, হাচি কাশিতে আক্রান্ত হয়ে ছিলাম। চোঁখ ও মুখমন্ডল জ্বালাতন থেকে রক্ষা পেতে সবসময় মাথায় হেলমেট পরিধান করে থাকি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বটতলা এলাকার একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ওই মিলগুলোতে হলুদ মরিচ ভাঙ্গে। হলুদ মরিচের গন্ধে আমাদের ব্যবসায়ীদের মুখে মাস্ক ও কাপড় বেঁধে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে বেচা বিক্রি করতে হচ্ছে। অনেক সময় হলুদ মরিচ ভাঙ্গার গন্ধে হাচি কাঁশিতে অনেকে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। আমরা ওই মিলগুলো দুরে কোথাও সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আমতলী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহিদুল ইসলাম জুয়েল তালুকদার বলেন, ওই হলুদ মরিচের মিলগুলোর কারনে সাধারণ মানুষ ও পথচারীরা বটতলা দিয়ে চলাচল করতে পারছেনা। তারা বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। জরুরী ভিত্তিত্বে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে ওই মিলগুলো অপসারনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
মিল মালিক খালেক আকন জানায়, মোগো তো এই খানে (বটতলা) মিল স্থাপন ও হলুদ মরিচ ভাংতে কেহ নিষেধ করে নাই।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল মুনয়েম সাদ মুঠোফোনে বলেন, জনবসতিপূর্ন এলাকায় মিলে ভাঙ্গানো হলুদ মরিচের গুড়ার গন্ধে এলাকাবাসী ও পথচারী (এ্যাজমা রোগীদের) হাচি কাঁশিসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ মুঠোফোনে বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া জনবসতি স্থানে হলুদ মরিচের মিলগুলো স্থাপন করা হয়ে থাকলে তদন্তপূর্বক মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (উপ-সচিব) মোঃ আব্দুল হালিম মুঠোফোনে বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া এবং জনবসতি এলাকায় হলুদ মরিচ ভাঙ্গানোর মিল স্থাপন করা যাবে না। সরেজমিন পরিদর্শন করে মিল মালিকদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।