আমরা সিটি করপোরেশন থেকে আসছি...
রাত তখন তিনটা। ঘুমন্ত নগরী। অনেকে তখনো সেহরী খেতে ওঠেনি। এমন সময় সবাইকে ডাকাছে সিটি করপোরেশন। ‘আমরা সিটি করপোরেশন থেকে আসছি, দরোজাটা একটু খুলুন’। না, সেহরী খাবার জন্য নয়। সিটি করপোশেনের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি খাবার সামগ্রি পৌঁছে দিতে ওই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহর নির্দেশে তারা রাতে বাড়ি বাড়ি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন।
সারা দেশে দিনের বেলা সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ দেওয়া হয়। অনেক স্থানেই সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ দেওয়ার চেষ্টা চলে। আবার দিনের বেলাও বাড়ি বাড়ি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ও সরকারি সহযোগিতা নিয়ে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগেও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কর্মহীন ও অসহায়দের পাশে দাঁচ্ছেন। কিন্তু একদম নিভৃতে এবং রাতে ত্রাণ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার এই উদ্যোগ চোখে পড়েনি। বাংলাদেশের অন্য কোথাও এমন উদ্যোগ হয়ে থাকলে সেটা আমাদের জানার বাইরে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাতভর বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিটি করপোরেশনের ওই সহযোগিতা পৌঁছে দিচ্ছেন।
বরিশাল সিটি করপোরেশন জানানয়, শুরুতে দিনের বেলা ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। অনেক এলাকায় ত্রাণ নিতে আসাসয় মানুষের ভীড় জমে যায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোনভাবেই ত্রাণ বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কোনভাবেই ওই বীড় কমানো যাচ্ছে না। করোনার ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কিন্তু ত্রাণ বিতরণের মাধ্যমে মানুষকে করোনার ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়ে যাচ্ছে। সেই কারণে দিনে ত্রান বিতরণ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সিটি করপোরেশন। বর্তমানে গভীর রাতে বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ায় এখন আর ঝুঁকি থাকছে না। করপোরেশনের কর্মীরা প্রতি বাড়িতে গিয়ে ওই সহযোগিতা পৌঁছে দিচ্ছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ত্রাণ তৎপরতা মাঠে থেকে তদারকী করা মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল বলেন, নগরের ৩০ ওয়ার্ডে সিটি মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষ থেকে দেওয়া ত্রাণ অসহায় মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছে করপোরেশনের কর্মীরা। শুরুতে দিনের বেলা দেওয়ায় ওয়ার্ডে ওয়াঢে মানুষের ভীড় জমে যেত। এত মানুষ একাত্র হলে করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। সেই আশাঙ্কা থেকে মেয়র মহোদয় রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌছে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশনার পর প্রতিদিন অত্যন্ত নীরবে প্রত্যেকের বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। করপোরেশনের কর্মীরা সারা রাত ওই কাজ করে। এই পদ্ধতিতে কর্মীদের একটু কষ্ট হলেও সবার হাতে ত্রাণের সহযোগিতা পৌঁছে যাচ্ছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহ এক লাইবে বলেছেন, ত্রাণ দেওয়ার বিষয়টি প্রচার করার কোন বিষয় নয়। প্রচারের চেয়ে মানুষের পাশে সহযোগী হয়ে থাকাটা জরুরী। নাগরিকদের করোনার ঝুঁকি মুক্ত রাখর জন্যই রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছ। দল-মত নির্বিশেষে সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টা অব্যাহ আছে। যদি কেউ ত্রাণ না পেয়ে থাকে তাহলে তাদের সিটি করপোশেনের নম্বরে যোগাযোগ করতে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।