আমাজনকে বাঁচাতে জি-৭ সম্মেলনে সাহায্যের অঙ্গীকার রাষ্ট্রপ্রধানদের

আমাজনকে বাঁচাতে যতরকমের প্রযুক্তি এবং আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন, তা করতে রাজি ফ্রান্স। রবিবার জি-৭ সম্মেলনের মাঝে এমনই জানিয়ে দিলেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরঁ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ১০ মিলিয়ন পাউন্ড আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন ইতিমধ্যেই। তবে সোমবার বাকি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এনিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে বলে সূত্রের খবর।
সপ্তাহ খানেক ধরে জ্বলছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ চিরহরিৎ অরণ্য। বিপন্ন জঙ্গলের প্রাণীকুল। প্রাকৃতিক কারণে নয়, জঙ্গল কেটে জমিকে চাষযোগ্য করে তোলার জন্য লাগাতার চেষ্টাই এমন বিপদের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত। এই পরিস্থিতি ব্রাজিল নিজে প্রথমদিকে উদাসীনই ছিল। পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে নড়েচড়ে বসে। আমাজনের দাবানল নিয়ে সর্বপ্রথম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স এবং জার্মানি।ফরাসী প্রেসিডেন্ট ম্যাকরোঁর কথায়, ‘এটা আন্তর্জাতিক সংকট’ এবং জি-৭ সম্মেলনকে সামনে রেখেই তিনি অন্যান্য দেশগুলিকেও এবিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। রবিবার ম্যাকরোঁ বলেন, ‘এই অগ্নিকাণ্ডের প্রত্যক্ষ প্রভাব যেসব দেশের উপর পড়ছে, তাদের সকলের উচিত, একযোগে এগিয়ে এসে যত দ্রুত সম্ভব আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা।আমার প্রতিনিধিরা আমাজোনিয়া দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। সকলে আলোচনা করে প্রযুক্তি কিংবা আর্থিক দিক থেকে সদর্থক কিছু পদক্ষেপ নেব।’ ইজরায়েলের তরফেও প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু ব্রাজিলকে আর্থিক সাহায্য দিতে প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে। পরিবেশপ্রেমী হিসেবে পরিচিত হলিউড অভিনেতা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও আমাজনকে বাঁচাতে ৫ মিলিয়ন ডলার সাহায্য করেছেন।
পৃথিবীর ফুসফুসকে রক্ষা করতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলি যখন এভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, সেখানে ব্রাজিল অর্থাৎ যে দেশের অধিকাংশ জুড়ে বৃষ্টিচ্ছায় অরণ্য, তারাই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে উদাসীনতা দেখিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে আগুন নেভাতে সেনাবাহিনী পাঠানো ছাড়া তেমন কিছুই করেননি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। দমকল বাহিনী, ৪৪ হাজার সেনার পাশাপাশি বলিভিয়ার তরফে পাঠানো বিমান থেকে ফেলা ট্যাঙ্কারের জলে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে বিশ্বের বিভিন্ন বনাঞ্চলে দাবানল রুখতে গুরুত্বপূর্ণ ‘মারকোজার’ চুক্তির বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। ব্রাজিল-সহ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলির সঙ্গে এই চুক্তি করতে তৎপর বলে জানিয়েছেন ইইউ-র কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। আর তাতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ব্রাজিলই। কারণ, এই দেশই দাবানল নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে ব্যর্থ।