আমাদের দাবি না মানা হলে ঢাকা অচল করার ঘোষনা আসবে: অনিক রায়

আমাদের দাবি না মানা হলে ঢাকা অচল করার ঘোষনা আসবে: অনিক রায়

“ বণিকের হাত থেকে বাচাও আমার শিক্ষা খাত, আধারের বৃত্ত ভেঙ্গে চিনিয়ে আনো রাঙ্গা প্রভাত” স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বরিশাল বিভাগীয় ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় মহাত্মা অশ্বিনী কুমার হলে অনুষ্টিত হয়। সমাবেশে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলার থেকে ছাত্র ইউনিয়ন কর্মীরা উপস্থিত হয়। 

আজ (১৮ই সেপ্টেম্বর) ৫৭ তম শিক্ষা দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১১ টায় মহাত্মা অশ্বিনী কুমার হলের সমাবেশ উদ্বোধন ঘোষনা করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়। উদ্বোধনের পর র‍্যালি বের হয় এবং তা বরিশাল শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। 

র‍্যালি শেষ হওয়ার পর মহাত্মা অশ্বিনী কুমার হল রুমে সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বরিশাল জেলার সভাপতি সম্পা দাসের সভাপতিত্বে এবং বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাস রাহুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সরদার রুহিন হোসেন প্রিন্স,বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর সাবেক সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম,মানবেন্দ্র দেব,ছাত্র ইউনিয়ন পিরোজপুর জেলার সভাপতি শাহানা মুন্নি, ঝালকাঠি জেলার আহবায়ক বন্যা সাহা,পটুয়াখালী জেলার আহবায়ক সোহেল মৃধা, ভোলা জেলার সভাপতি জুয়েল মজুমদার সহপ্রমুখ। সমাবেশ শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বরিশাল জেলার সহ-সভাপতি কিশোর কুমার বালা। 

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় বলেন,” জেলায় জেলায় শিক্ষা বৈষম্যে দূর করার দাবি আমরা করছি এবং কিভাবে এই বৈষম্য দূর করা যায় তারও পথ আমরা সরকারকে দেখিয়ে দিয়েছি। আমরা বলেছি কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর উপর তাদের বাৎসরিক লভ্যাংশ থেকে ৫% এডুকেশনাল সারচার্জ আরোপ করতে হবে এবং আমরা হিসেব করে বলে দিয়েছি এর থেকে যে প্রাপ্ত অর্থ তা দিয়ে প্রত্যেক জেলায় নতুন করে নুন্যতম ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা সম্ভব। এ দিয়ে সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মান উন্নয়ন করা সম্ভব। কিন্তু যদি আমাদের দাবি না মানা হয় তা হলে কিভাবে দাবি মানাতে হয় তাও আমরা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জানে। এ বছরের মধ্যে যদি আমরা সরকারের উদ্যোগ না দেখি তাহলে আগামী বছর ঢাকা অচল করার মত কর্মসূচী আমরা দেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।“

সমাবেশে বক্তব্যে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন,” আমরা যে শিক্ষা লাভের অধিকার পাচ্ছি তার জন্য মূল কৃতিত্ব এই দেশের কৃষক-শ্রমিকদের। কারন তাদের কষ্টের টাকায় দেশ চলে,তাদের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের  শিক্ষা লাভ নিশ্চিত হয়। আজকে আমাদের দেশের মানুষ ভাল নাই,গরীব আরো গরীব হচ্ছে ধনী হচ্ছে ধনী। আমাদের এই কৃষক-শ্রমিকদের সাথে নিয়ে আন্দোলন করতে হবে দেশ বাচাতে। কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-জনতার যুথবদ্ধ আন্দোলনই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারন করবে।“

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম বলেন,” ক্যাম্পাসগুলো আজকে দখলদারদের হাতে জিম্মি। শুধু ক্যাম্পাস না সারা বাংলাদেশ আজকে জিম্মি এই দখলদারদের হাতে। দখলদারদের হাত থেকে ক্যাম্পাস-দেশ বাচাতে দরকার কার্যকর আন্দোলন এবং এই আন্দোলন গড়ে তোলার ঐতিহাসিক দায়িত্ব বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের এবং আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন তার ইতিহাস অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।“

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন-এর সাবেক সভাপতি এবং অগাস্ট ছাত্র আন্দোলনের কারাবরণকারী  নেতা মানবেন্দ্র দেব বলেন,”  শিক্ষাব্যবস্থা আজকে সম্পূর্নভাবে ব্যবসায়িদের হাতে চলে গেছে। ব্যবসায়িরা মুনাফা লাভের আশায় শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তর করেছে এই দেশের শাসক শ্রেণির প্রত্যক্ষ মদদে। সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তির কাছে মাথা নতও করেছে, তাই আজ বই থেকে বাদ পড়ে রবীন্দ্রনাথ,জীবনানন্দ,রণেস দাসদের লেখা। সম্পূর্ন শিক্ষাব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন আনার সময় এসেছে। এর জন্য দরকার আন্দোলন,কার্যকর ছাত্র আন্দোলন। এর জন্য ছাত্র ইউনিয়নকে তার নীল পতাকা নিয়ে ছড়িয়ে পড়তে হবে সারা বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীদের সমবেত করতে ছাত্র ইউনিয়নের পতাকাতলে।“

সমাবেশ শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।