ইতালিতে মেয়েকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ তুলে জামাইয়ের বিরুদ্ধে বাবার

ইতালিতে দ্বিতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে তিন সন্তানের জননী এক নারীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ করেছেন তার পরিবার। এমনকি এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করেছেন তারা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন নিহত নারীর বাবা আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বরিশালের মুলাদী উপজেলার চর ডুমুরতলা এলাকার কোব্বাত আলীর ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালে পিরোজপুর বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী মোক্তার হোসাইনের সাথে বিয়ে হয় আমাদের ছোট মেয়ে মরিয়ম আক্তারের। বিয়ের পর ২০০৮ সাল থেকে স্বামীর সাথে ইতালিতে বসবাস করে সে। দাম্পত্ত জীবনে তাদের তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
এদিকে, ‘২০২১ সালে করোনা মহামারির সময় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন স্বামী মোক্তার হোসাইন। মৃত্যুর কিছুদিন পরেই ইতালিতে তার মামাতো ভাই নাহিদ হাসান জাকির ওরফে মনু মিয়া মরিয়মকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এমনকি পরবর্তীতে ২০২২ সালে তারা ইতালিতে বসেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
নিহতের বাবা কোব্বাত আলী বলেন, ‘বিয়ের কিছুদিন না যেতেই মরিয়মের সকল স্বর্ণালংকার এবং টাকা দ্বিতীয় স্বামী নাহিদ হাসান জাকির ওরফে মনু মিয়া তার কাছে জমা দিতে বলে। এ নিয়ে পরিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায় মরিয়মের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। যা মরিয়ম একাধিকবার ফোন করে আমাদের জানায়।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘স্বর্ণালংকার এবং টাকা না পেয়ে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মরিয়মকে আগুনে পুড়িয়ে ইতালির একটি হাসপাতালে ভর্তি করে মনু মিয়া। এরপর ১৪ এপ্রিল আমরা মরিয়মের মৃত্যুর খবর পাই। এরপর থেকে মনু মিয়ার সাথে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সকল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এ থেকেই বোঝায় আমার মেয়েকে মনু মিয়ার পুড়িয়ে মেরেছে।
তিনি দাবি করেন, ‘নাতনিদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি মরিয়মের মৃত্যুর পরে নাহিদ হাসান জাকির ওরফে মনু মিয়া আমার মেয়ের স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। এসব বিষয় নিয়ে আমার ভাইয়ের মেয়ের জামাই সাদ্দাম সিকদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। এজন্য মনু মিয়ার অপর স্ত্রী বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়ে হত্যা এবং ভাইজি জামাইকে হয়রানির বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তসহ বিচারের দাবি জানান নিহত মরিয়মের বাবা আব্দুর রাজ্জাক। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্তদের কারোর বক্তব্য জানা যায়নি।