ইসি গঠনে আইনের প্রস্তুতি বহু আগে থেকে

নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করার প্রস্তুতি আগেই নেওয়া ছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তড়িঘড়ি করে আইন প্রণয়নের অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, প্রস্তুতি তো আমাদের বহু আগে থেকে ছিল। অন্য কোনো দল করেনি। আওয়ামী লীগ আবার করল। করে জনগণের ভোট সুরক্ষিত হল এবং নির্বাচনের আরেকটা ধাপ আমরা এগিয়ে গেলাম। গণতন্ত্রকে আরও আমরা শক্তিশালী করলাম।
বৃহস্পতিবার সংসদে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল’ পাসের পর এ কথা বলেন তিনি।
এদিকে দুপুরে আইনমন্ত্রী উত্থাপিত বিলটি পাস হয়। রাতে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব এবং অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তা নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৭ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতি যখন আমাদের সকলকে ডেকেছিলেন তখনই তিনি বলেছিলেন, আমাদেরও প্রস্তাব ছিল। অনেক দিন থেকে মোটামুটি প্রস্তুত করে রেখেছিলাম।’
ইসি গঠনে সুনির্দিষ্ট আইন গত ৫০ বছরে না থাকায় বরাবরই নিয়োগের সময় বিতর্ক দেখা দিচ্ছিল। তা এড়াতে ২০১২ সালে কমিশন নিয়োগের সময় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটি নামে একটি মধ্যস্থ ফোরাম তৈরি করলেও বিতর্ক থামেনি।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবারও সেই পথে এগোচ্ছিলেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষ করার আগেই আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত সপ্তাহে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এই সপ্তাহের শেষ দিনে তা সংসদে পাস হয়।
আইন পাসের সময় আপত্তি জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্যরা বলেছিলেন, তাড়াহুড়ো করে আইনটি করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা গত ১৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যখন ডায়ালগ করতে গেলাম, তখন তিনি বললেন, বিলটা তাড়াতাড়ি পাস করে দিলে ….। তিনি চান এই বিলের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন এবং প্রধান কমিশনার এবং কমিশনাররা নির্বাচিত হোক। আমরা পার্লামেন্টে নিয়ে আসলাম। কিন্তু প্রস্তুতি তো আমাদের বহু আগে থেকে ছিল। অন্য কোনো দল করেনি। আওয়ামী লীগ আবার করল। করে জনগণের ভোট সুরক্ষিত হল এবং নির্বাচনের আরেকটা ধাপ আমরা এগিয়ে গেলাম। গণতন্ত্রকে আরও আমরা শক্তিশালী করলাম। জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
সংসদে সম্মতিসূচক ভোটে পাস হওয়া বিলটিতে রাষ্ট্রপতি সই করার পর গেজেট আকারে প্রকাশ হলেই প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন পাবে বাংলাদেশ।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির মেয়াদ শেষ হবে। ফলে নতুন আইনেই নতুন কমিশন গঠন করতে পারবেন রাষ্ট্রপতি।
আইনটি নিয়ে সংসদের ভেতরে ও বাইরে সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই পার্লামেন্টে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিলটা পাস করতে পেরেছি। মাননীয় স্পিকার, যতগুলি সংশোধনী এনেছে এই বিলে। ২২টা সংশোধনী বিরোধী দলের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। বিরোধী দল মানে কী? এখানে জাতীয় পার্টির সংশোধনী, বিএনপির সংশোধনী, জাসদের সংশোধনী আমাদের ওয়ার্কার্স পার্টির সংশোধনী সকলের সংশোধনী আমরা গ্রহণ করেছি। তাতে এই বিল আর সরকারি বিল না, এটা বিরোধী দলে তৈরি করা বিল হয়ে গেছে। সবার হয়ে গেল। জাতীয় পার্টির, বিএনপির, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফোরাম সবার। সকলে বক্তব্য দিয়েছেন।বিলটি পাসের জন্য স্পিকারসহ সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।