ঈদে ঘরমুখো মানুষ এবং বাজারের নিরাপত্তা দিতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বরিশালের প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাব এবং বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। গত কয়েক বছরের তুলনায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দৃশ্যমান উদ্যোগ নিয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। রোজার মধ্যেই তারা ওই প্রস্তুতি শুরু করে।
গত কয়েকদিন ধরে ঈদবাজার এবং নগরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন, মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য দপ্তর। নৌবন্দর, বাজার এবং যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা পরিদর্শন করেছেন মেয়র, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ কর্মকর্তারা।
ইতিমধ্যে ঈদ বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে যত্রতত্র গাড়ি পাকির্ং এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশ ও সটি করপোরেশনের উদ্যোগে ঈদ বাজার ঘিরে পার্কিং জোন করা হয়েছে। নগরসহ ওইসব এলাকায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ পদক্ষেপ শুরু করেছে ট্রাফিক পুলিশ। ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা, নির্বিঘ্নে ঈদ বাজারে চলাচলের জন্য কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
যানবাহন ও সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয় হয় ঈদের ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে। ঢাকা-বরিশাল নদী পথ ঝুুঁকিমুক্ত রাখতে নৌনিরাপত্তা বিভাগ, বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌপুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।
বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও বরিশাল চেম্বর অব কমার্সের সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, বরিশালের মানুষ নৌপথে চলাচল করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে। কেবল ঈদের সময় দক্ষিণাঞ্চলে ৫০ লখ মানুষ আসবে। এর অর্ধেকের বেশি সরাসরি বরিশালে আসবে। তাদের নির্বিঘ্নে বাড়িতে পৌছে দিতে লঞ্চ মালিক সমিতি, আইনি শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বিআইডব্লিউটিএ কাজ করছে। যাত্রীওদর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বরিশালের প্রশাসন ইতিমধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি মাদক কারবারি, ছিনতাইকারী চক্র, অজ্ঞান পার্টি, প্রতারকসহ দুস্কৃতিকারীদের রুখতে কৌশলী হচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এব্যাপারে বরিশালের জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমান জানিয়েছেন, ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রী এবং ঈদ বাজারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে সমন্বয় সভা করা হয়েছে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি এবার ঘরমুখো মানুষকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে।
বরিশাল সদর নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত ফোর্স প্রদানের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। নিয়মিত নিরাপত্তার অংশ হিসেবে আমরা কাজ করছে নৌপুলিশ। নৌ-পথে মাদক যেন বরিশালে ঢুকতে না পারে, ছিনতাইকারী চক্র বা মলম বাহিনী যেন সক্রিয় হয়ে না উঠতে পারে সেজন্য নৌ-পুলিশের অভিযান আগে থেকেই চলমান রয়েছে।
এদিকে ঈদ ও ঈদ বাজারকে ঘিরে বাড়তি মেট্রোপলিটন পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরইমধ্যে নগরের রূপাতলী ও নথুল্লাবাদ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ দুটি বাস টার্মিনাল ও নদী বন্দরকে ঘিরে র্যাব তাদের কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে।
সার্বিক বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও সহকারী কমিশনার নাছির উদ্দিন মল্লিক জানান, মেট্রোপলিটন পুলিশের সবগুলো ইউনিট একসঙ্গে কাজ করছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা টিম দায়িত্ব পালন করছে। শপিংমল, ব্যবসা প্রধান এলাকাসহ নগরের অলি-গলিতে আমাদের সদস্যরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছে। আশা করি বরিশালবাসী নির্বিঘ্নে ঈদ কাটাতে পারবে। কোন অপ্রতিকীর ঘটনা ঘটবে না।