উত্তপ্ত দিল্লি: ১৪৪ ধারা জারি

উত্তপ্ত দিল্লি: ১৪৪ ধারা জারি

ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিরোধী বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ দিল্লি। গত তিন দিনে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে।

দুই দিনের সফরে গতকাল সকালে ভারত পৌঁছান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিন নাগরিকত্ব আইনকে ঘিরে পক্ষ-বিপক্ষে আরও বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠে দিল্লি। ভাঙচুর করা হয় দোকানপাট। গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

মঙ্গলবার সকালেও নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ভারতের রাজধানী। এ দিন নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ জনে। এ দিন এক সাংবাদিককে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয় বলে জানা গিয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আরও ৩০ জন ভর্তি হয়েছেন।

কয়েকটি এলাকায় মসজিদেও হামলা চালায় সিএএ সমর্থনকারীরা। জ্বলন্ত মসজিদের ছবি তুলতে গেলে প্রচণ্ড মারধর করা হয় এনডিটিভি চ্যানেলের দুই সাংবাদিক অরবিন্দ গুণশেখর ও সৌরভ শুক্লাকে।

এদিন উত্তর-পূর্ব দিল্লির মৌজপুরে হামলাকারীদের গুলিতে জখম হয়েছেন জে কে ২৪X৭ নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিক আকাশ। তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় স্থানীয় হাসপাতালে। ওই এলাকাতেই ছবি তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হন টাইমস অব ইন্ডিয়ার চিত্র সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, সিএএ-র বিরুদ্ধে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই অবস্থান বিক্ষোভ চলছিল জাফরাবাদ, সিলামপুরসহ একাধিক জায়গায়। রবিবার সেখানে সিএএ’র সমর্থনে পাল্টা মিছিল করেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। তিন দিনের মধ্যে বিক্ষোভ থেকে সরে না আসলে হুমকি দেন তিনি।

এরপরই জাফরাবাদসহ আশপাশের এলাকার পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। সিএএ বিরোধীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন সিএএ সমর্থকেরা। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা রতনলাল। অন্যান্যদের মধ্যে শনাক্ত হন-শাহিদ, মোহাম্মদ ফুরকান, রাহুল সোলাঙ্কি এবং নাজিম। বাকি দু’জনকে শনাক্ত করা যায়নি। এ ছাড়াও ইটের আঘাতে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

সংঘর্ষে বন্দুক হাতে ভাইরাল হওয়া নায়কোচিত চেহারার এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তার নাম শাহরুখ বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।

এদিকে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দিল্লি পুলিশও। একটি বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসা অব্যাহত বলে ফোনে লাগাতার অভিযোগ পাচ্ছি আমরা।’

সিএএ সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করায় গতকালই রাজধানীর একাধিক মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হয়। এ দিনও জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, গোকুলপুরী, জোহরি এনক্লেভ এবং শিব বিহার মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হয়। ওই সমস্ত স্টেশনে বন্ধ রাখা হয়েছে মেট্রো চলাচলও।  উত্তর-পূর্ব দিল্লির সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলও বন্ধ রাখা হয়েছে। একাধিক জায়গায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা।