এ সংবিধান দিয়ে দেশ চলবে না

এ সংবিধান দিয়ে দেশ চলবে না

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেছেন, এই সরকারের আয়ু ৬ মাস। সরকারি দলের নেতাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা ভালোভাবে সেফ এক্সিট নেবে নাকি গণরোষে নিষ্ঠুরভাবে বিদায় নেবে।

তিনি বলেন, যেভাবে বিরোধী দলগুলো রাজপথে নেমে গেছে এভাবে আন্দোলন করতে পারলে শীঘ্রই সরকারের পতন হবে। এ সরকার সংবিধানকে কেটে ছিঁড়ে গণবিরোধী সংবিধানে পরিণত করেছে। এ সংবিধান দিয়ে দেশ চলবে না। দেশ-জাতির প্রয়োজনে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ইজরায়েল থেকে ফোনে আড়িপাতার যন্ত্রপাতি ক্রয়, গোয়েন্দা নজরদারির নামে নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হরণ, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার রাজবন্দিদের মুক্তি, বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

নুর বলেন, বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম কমলেও সরকার দেশে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে ইভিএমের টাকার জন্য তড়িঘড়ি করে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার। চাইলেও ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো আর বিনা ভোটের নির্বাচন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ইজরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও সরকার কয়েক'শ কোটি টাকার নজরদারি যন্ত্রপাতি কিনেছে। গোয়েন্দা নজরদারির নামে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হরণ করা সংবিধান পরিপন্থি, বেআইনি কাজ, মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আওয়ামী লীগের গুজব এবং অপপ্রচার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে বিরোধীদের নিয়ে গুজব ছড়াবে।

জনগণকে বলবো গুজব এবং অপ্রচারের কান দেবেন না। সাংবাদিক ভাই ও মিডিয়ার মালিকদের বিনয়ের সাথে অনুরোধ করবো আপনারা মানুষের ব্যক্তিগত ফোন আলাপ টেলিভিশনে প্রচার করবেন না। সরকার ক্ষমতায় থাকতে নানা ষড়যন্ত্র ও নীলনকশা নিয়ে আগাচ্ছে। ১৪-১৫ সালের মতো সরকার অগ্নিসংযোগ করে বিরোধীদের ওপর দায় চাপাতে চায়। এমনকি তারা বিরোধীদের ফাঁসাতে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ওপরও হামলা করতে পারে। তাই প্রশাসনকে বলবো আপনারা অবৈধ সরকার সঙ্গ ছেড়ে জনগণের সাথে থাকেন, যোগ করেন নুর।

বিরোধী দলগুলোকে সরকার পতনের আন্দোলন রাজপথে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানিয়ে যারা গোপনে আওয়ামী লীগের সাথে আসন ও সুবিধা নিয়ে আঁতাত করছে তারা জাতীয় বেইমান হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে সতর্ক করে দেন নুরুল হক নুর।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৪ বছরে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে ১৩ বার। আবার বলে কুইক রেন্টালের দুর্নীতি নিয়ে কথা বললে বিদ্যুৎ কেটে দেবে বলে সরকার হুমকি দিচ্ছে। জনগণের ভ্যাট ট্যাক্সের রক্তের ঘাম শ্রমের টাকায় পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বিদ্যুৎ প্লান্ট করে নিজেদের সম্পদ দাবি করে। এখন আর বিইআরসি লাগছে না, আইন করেছে নির্বাহী আদেশেই ৫ শতাংশ দাম বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্র প্রকাশ পাচ্ছে। এই সরকার ভুয়া সরকার, ভোটচোর সরকার। তড়িঘড়ি করে ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকা ব্যায় করে ইভিএম কিনবে। কারণ, এই সরকারের বাঁচার জন্য ইভিএম ছাড়া রক্ষা নাই। এই ভোটচোরের ভ্যাকসিন হলো গণআন্দোলন।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান খানের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, আবু হানিফ, মো. সোহরাব হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, শাকিলুজ্জামান, মালেক ফরাজী, সহকারী আহ্বায়ক তামান্না ফেরদৌস শিখা, যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রহমান। গণঅধিকার পরিষদের মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব ইসমাইল, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মুনজুর মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।