কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবন ভারতের গণতন্ত্রের পক্ষেও অপরিহার্য

কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবন ভারতের গণতন্ত্রের পক্ষেও অপরিহার্য

ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সর্বস্তরে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। সেই সাথে তিনি বলেছেন কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবন কেবলমাত্র তাদের দলের কাছেই নয়, দেশের ও সমাজের গণতন্ত্রের পক্ষেও অত্যন্ত জরুরী। এর পাশাপাশি বিরোধী দলগুলিকে ক্রমাগত নিশানা করা ও ভীতি সঞ্চার করা নিয়েও কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে তোপ দেগেছেন সোনিয়া। 

মঙ্গলবার দিল্লিতে সংসদের সেন্ট্রাল হলে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের (সিপিপি) বৈঠকে সদস্যদের উদ্দেশ্যে সোনিয়া এই কথা বলেন। সোনিয়া ছাড়াও মনমোহন সিং, রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, অধীর রঞ্জন চৌধুরী, তরুণ গগৈ, পি.চিদাম্বরম, অম্বিকা সোনি সহ দলের রাজ্যসভা ও লোকসভার সাংসদরা উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। 

সোনিয়া বলেন ‘দলের জন্য সামনের রাস্তা আগের চেয়ে আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। আমাদের আত্মোৎসর্গ, সংকল্প, প্রাণোচ্ছলতা কঠোর প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। আমাদের বিশাল সংগঠনের সকল স্তরেই একতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবং দলের মধ্যে ঐক্য নিশ্চিত করতে যা যা প্রয়োজন আমি তা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবন কেবল আমাদের দলের সদস্যদের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি আমাদের গণতন্ত্র এবং সমাজের জন্য অপরিহার্য।’ 

গত ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে দেশটির পাঁচ রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, গোয়া, মণিপুর-এই চার রাজ্যেই বিজেপির কাছে ধরাশায়ী হয়েছে কংগ্রেস। অন্যদিকে একমাত্র পাঞ্জাবে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলেও এবারের নির্বাচনে আপ’এর কাছে তারা বিপর্যস্ত হয়ে পাঞ্জাবও হাতছাড়া হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই দলের এই হতাশাজনক পারফরমেন্সের পরই দলের উদ্দেশ্যে এই বার্তা সোনিয়ার। 

পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে দলের হতাশাজনক পারফরমেন্সকে বেদনাদায়ক এবং আশ্চর্যজনক হিসাবে আখ্যায়িত করেন কংগ্রেস সাংসদ। 
আগামী ২০২৪ সালে দেশটির লোকসভার নির্বাচন। যদিও তার আগে আগামী দুই বছর ধরে দেশটিতে আরও বেশ কিছু রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন রয়েছে। কিন্তু একের পর এক নির্বাচনে একদিকে যেমন রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তেমনি দলের ভরাডুবির পরই বিক্ষুব্ধ নেতাদের একটি গোষ্ঠীও তৈরি হয়েছে-যা ‘জি-২৩’ নামে পরিচিত। সেক্ষেত্রে আসন্ন নির্বাচনগুলিতে দলের ভালো ফলের লক্ষ্যে সংগঠনকে মজবুত করে ফের নির্বাচনী ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে চান সোনিয়া। আর এই কাজে দলের সব পক্ষকে নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন তিনি। দলের পারফরমেন্স নিয়ে পর্যালোচনা করতেই কার্যকরী কমিটির সদস্যরা এদিন বৈঠকে বসে। পাশাপাশি দলকে আরও শক্তিশালী করতে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা নিয়েও দলের সিনিয়রদের পরামর্শ নেন সোনিয়া। 

এদিনের বৈঠকে বিজেপিকে তোপ দেগে সোনিয়া বলেন ‘কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল অনবরত বিরোধীদের, তাদের নেতাদের, কর্মীদের টার্গেট করে চলেছে। তারা রাজ্যে রাজ্যে একটা ভয়ের পরিবেশ ছড়াতে চাইছে। কিন্তু তাদের এই হুমকি দেওয়ার রণকৌশলে কংগ্রেস মোটেই ভীত নয়। আমরা চুপ করে থাকবো না।’ তার আরও অভিমত ‘আমরা কিছুতেই কয়েক শতাব্দী ধরে চলমান আমাদের বৈচিত্র্যময় সমাজ, আমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব, সম্প্রীতির বন্ধনকে ধ্বংস করতে দেব না।