করোনা ভাইরাস, সতর্ক থাকতে হবে

করোনা ভাইরাস, সতর্ক থাকতে হবে

করোনা ভাইরাস নিয়ে সারা দুনিয়ায় ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে চীনে। চীনে রেড এলার্ট জারি হয়েছে। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে উহানসহ বিভিন্ন প্রদেশে বাংলাদেশের অনেক নাগরিক অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। অনেকের বাসায় খাবার পর্যন্ত শেষ হয়ে গেছে। কোন কোন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি স্বজনদের অবহিত করেছেন। বাংলাদেশেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন প্রকল্পে হাজার হাজার চীনা নাগরিক কাজ করছেন। আবার বাংলাদেশের হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা নিতে চীনে অবস্থান করছেন। এই দুই দেশের বাসিন্দাদের আশা-যাওয়ার মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


করোনা ভাইরাস আক্রান্ত চীনা নাগরিক বাংলাদেশে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। এ ছাড়াও চীনে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক যারা এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আসছেন তাদের মাধ্যমেও এই ভাইরাস বাংলাদেশে বিস্তার ঘটাতে পারে। আমাদের সতর্ক হতে হবে। সতর্কতাই আমাদের এই ভারাস থেকে প্রথমত দূরে রাখতে সাহায্য করবে। এই ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের   উদ্যোগ নিতেই হবে। তাই সতর্কতা এবং সতর্কতাই হবে মূল সূচক। আমদের বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করতে হবে। যাতে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত একজন নাগরিকও বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে।


বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে সেব্যাপারে সতর্কতা জারী করেছে বাংলাদেশ সরকার। বিমানবন্দর, নৌবন্দরে বিশেষ নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। এর সঙ্গে দেশি প্রকল্পে নিয়োজিত বিদেশি নাগরিকদের ওপরও নজর রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশের যেসব প্রতিষ্ঠানে চীনা নাগরিকরা কর্মরত আছেন, তাদের দেশ ত্যাগ না করা এবং যারা ইতিমধ্যে চীন থেকে বাংলাদেশে এসেছেন, তাদের পর্যবেক্ষণে রাখছেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
পদ্মাসেতু প্রকল্প, দক্ষিণাঞ্চলের কলাপাড়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রর চীনা প্রকৌশলী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বিশেষ সচেতনতা সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলাপাড়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং পদ্মসেতু প্রকল্পে নিয়োজিত চীনা প্রকৌশলী ও শ্রমিকদের বাংলাদেশ ত্যাগ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যারা এই মুহূর্তে চীনে অবস্থানকারী চীনা নাগরিক ও বাংলাদেশি নাগরিকদেরও দেশে না আসার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে কর্মরত চীনা নাগরিকদের মধ্যে বড় একটি অংশ চীনের নববর্ষ পালন উপলক্ষে ছুটি নিয়ে বাংলাদেশ থেকে চীনে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে গত ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশ ফিরে আসা ২২ চীনা নাগরিককে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।


করোনা ভাইরাস সংক্রামন এড়াতে এবং করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সব জেলা হাসপাতালে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইসোলেশন কক্ষ চালু করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওই কক্ষের জন্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে চিকিৎসক। ইতিমধ্যেই নতুন ওয়ার্ডে স্থাপন করা হয়েছে ভেল্টিলেটিং মেশিনসহ যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৫ জনের একটি সেবিকা দল।


আমরা বলতে চাই, বিশ^ায়নের যুগে যেমন আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছি। তেমনি নানমুখী সমস্যাও আমদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি ও আধুনিক চিকিৎসা দিয়ে এসব সমস্যার সমাধানও করতে সক্ষম হই। তবে সমাধানের আগেই অনেক কিছু হারাতে হয়। তারপরও আমরা সম্ভাবনার বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা সব কিছু জয় করবোই। এর আগে আমরা ডেঙ্গু ভাইরাস মোকাবেলা করেছি। অনেকটা সফলও হয়েছি। এবার করোনা ভাইরাস থেকেও আমরা সতর্ক থেকে মোকাবেলা করবো। এজন্য প্রতিটি নাগরিককে সচেতন হতে হবে। সরকারের সঙ্গে আমাদের সবার সহযোগী মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।