করোনাভাইরাসের তথ্য দেয়া সেই চীনা সাংবাদিক নিখোঁজ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চীনের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বাইরের দুনিয়ায় খবর পাঠাতেন দুই সাংবাদিক।
যেখান থেকে ভাইরাসটির উৎপত্তি সেই উহান শহর থেকেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়মিত ভিডিও ছড়িয়ে দিতেন তারা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, এই দুই চীনা সিটিজেন জার্নালিস্ট বা নাগরিক সাংবাদিক হচ্ছেন চেন চিউশি এবং ফাং বিন। কিন্তু প্রথম জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
চেন চিউশি’র সঙ্গে গত তিনদিন ধরে কোনো যোগাযোগ করা যায়নি। শুক্রবার সারাদিন নীরব থাকার পর সন্ধ্যায় একটিমাত্র ভিডিও পোস্ট করেন ফাং বিন।
তাকে এর আগে একটি হাসপাতালে করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তিদের লাশের ভিডিও তোলার অপরাধে কিছুক্ষণের জন্য আটক করে কর্তৃপক্ষ।
সেই মুহূর্তেরও ভিডিও তোলেন ফাং বিন, যখন কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তার অ্যাপার্টমেন্টের দরজা ভেঙে তাকে কোয়ারান্টিনে রাখার উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যায়। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অনলাইনে সোচ্চার হয়ে ওঠেছিলেন বিপুলসংখ্যক মানুষ।
ফাং বিন মুক্তি পেলেও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না চেন চিউশির। তার বন্ধুরা চেনের টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি মেসেজের মাধ্যমে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটা থেকে যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন তিনি।
সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গ চেনকে মেসেজ করে জানতে চায়, তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত কিনা। সেই মেসেজেরও কোনো উত্তর এখনো আসেনি।
চীনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা থাকার দরুন মার্কিন সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছিল চেন এবং ফাংয়ের পোস্টগুলো।
এদিকে করোনাভাইরাসের খবর ছড়াতে শুরু করার পর থেকেই আরও সক্রিয় হয়ে উঠে চীনা কর্তৃপক্ষের ইন্টারনেট নজরদারি। চীনের জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম উইবো, উইচ্যাট, ডুয়েইনের বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট অচল করে দেয়া হয়েছে।
এই ভাইরাস প্রথম শনাক্তকারী চিকিৎসকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠে। তখন বেশ কিছু পোস্ট এবং কমেন্ট মুছে ফেলে পরিস্থিতি শান্ত করারও চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ।
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্ল্যাটফর্ম টুইটারই হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্যের একমাত্র উৎস। চীনে অবশ্যই নিষিদ্ধ টুইটার, তবে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)-এর মাধ্যমে টুইটারে আসছেন অনেকেই।