কাজল, দিদারুল, মুশতাকদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ৩১১ নাগরিক

সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ভূঁইয়া, ফেইসবুক ইউজার মুশতাক আহমেদসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার কয়েকজনের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ৩১১ নাগরিক। বুধবার এক বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, এমিরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি; আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; শহিদুল আলম, আলকচিত্রী ও লেখক; বদিউল আলম মজুমদার, সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষার্থী, এক্টিভিস্ট, গবেষক, রাজনৈতিক কর্মী, স্বেচ্ছাসেবী, উন্নয়নকর্মী, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিবর্গ।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘মুশতাক আহমেদ রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফেইসবুকে সমালোচনামূলক লেখালেখি করতেন। দিদারুল ভুঁইয়া অনলাইনে লেখালেখির পাশাপাশি করোনা সংকটের সময়ে শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা দিচ্ছিলেন। আর আহমেদ কবির কিশোর ফেসবুকে কার্টুন আঁকতেন। গত ৪ ও ৫ মে তাদেরকে র্যাবের পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ সময়ে তাদের কম্পিউটারের সিপিইউ, ল্যাপটপ, বাসার সিসিটিভি সরঞ্জাম কোন তালিকা প্রদান ছাড়াই জব্দ করা হয়।’
তারা বলেন, ৬ মে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কিশোর, মুশতাক ও মিনহাজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রমনা থানায় র্যাব বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে এদের বিরুদ্ধে। এই মামলায় আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা হচ্ছে।
তারা আরো বলেন, ‘প্রায় দুই মাস নিঁখোজ থাকার পর ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের সন্ধান পাওয়ার পর দিন থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া সাদা পোশাকধারীদের দ্বারা তুলে নিয়ে যাবার অনেকগুলো ঘটনা আমাদেরকে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে।
সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি গ্রেপ্তারের ঘটনা তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ৫ মে দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন বাজার থেকে মোমেন প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান মনিরের কাঁচা ধান কাটার ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করার ‘অপরাধে’। একইভাবে গত ১৫ মার্চ গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার চুপাইর গ্রামে সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সরকারি কলেজের শিক্ষক মোতাহার হোসেনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান মেলেনি। চলতি মাসেই এ পর্যন্ত কমপক্ষে পাঁচজন সংবাদকর্মীকে ডিজিটাল আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিন্ন মতের নেতাকর্মী, আইনজীবী, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার গতি যেন কিছুতেই কমছে না।’