কিটনাশক ব্যবহারে সচেতন হতে হবে

কিটনাশক ব্যবহারে সচেতন হতে হবে

আমরা কি খাচ্ছি। কি খাবো। কি খাবো না। কেন খাবোসহ নানা তথ্য এখন সামাজিক যোগাযোগম মাধ্যমসহ খবরের কাগজ এবং টেলিভিশন খুললেই চোখে পড়বে। কলা পাকাতে কার্বাইড ব্যবহার, মছ মাংসে ফরমালিন ব্যবহার, জিলেপিতে পোড়া মবিল ও জিংক ব্যবহার নিত্যদিনের ঘটনা। এগুলো আমাদের অনেকটা গাসহা হয়ে গেছে। মনে হয় এটা তো আমাদের জানা বিষয়। আমরা এর থেকে কোনভাবেই রেহাই পাবো না। কেউ কেউ অবশ্য কিছু কিছু ফল-মূল খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কি এই সমস্যার সমাধান হবে? হবে না। এসব বিষ থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে। 

এ তো গেল কেবল কার্বাইড আর ফরমালিনের কেচ্ছা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কিটনাশক সম্পর্কে এমনসব তথ্য দিয়েছেন, যা কার্বাইড এবং ফরমালিনের চেয়েও ভয়াবহ। কৃষি ভিাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এক লিটার পানিতে দুই চামচ লবন দিয়ে শাক এবং ফল-মূল এক ঘন্টা ভিজিয়ে রাখলে শরীরে এর প্রভাব পড়বে না। কিন্তু ধান, শবজি ও ফলমূলে যে যথেচ্ছার কিটনাশক ব্যবহার হচ্ছে তার প্রভাব থেকে মুক্ত হবো কিভাবে?

বাজারে বেশ কিছু কিটনাশক আছে, যার প্রভাব থাকে এক মাস কিংবা তার চেয়েও বেশি। আবার কিছু কিটনাশক আছে যার প্রভাব থাকে এক সপ্তাহ থেকে ১৫দিন। দাম কম বেশি হওয়ার কারণে অনেক কৃষক দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব থাকা কিটনাশক ব্যবহার করছেন।

ধান চাষে এক মাস মেয়াদী কিটনাশক দিলে কোন সমস্যা হয় না। কারণ ধান পাকতে কম পক্ষে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। ততোদিনে ওই কিটনাশকের বিষক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়। এরপর ওই ধান খেলে শরীরে কোন ধরণের প্রভাব পড়ে না। কিন্তু অনেক কৃষক না জেনে ধানে ব্যবহার করা কিটনাশক শবজিতে ব্যবহার করছেন। সবজি এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসে। কিন্তু ওই সবজি খেলে কিটনাশষকের বিষ সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে। এই শবজি লবন পানিতে ভিজিয়ে রাখলেও এর বিষক্রিয়া নষ্ট হবে না। এটা কার্বাইড এবং ফরমালিনের চেয়েও ভয়াবহ ক্ষতিকর। তাই কিটনাশক ব্যবহারে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে।

কলায় কার্বাইড দিলে সব কলা এক সঙ্গে পেকে হলুদ হয়ে যায়। অথচ কাচা কলার মধ্যে যদি একটি পাকা কলা রেখে পলিথিনে মুড়ে একদিন রাখা হয় তাহলে কলা পেকে যাবে। ওই কলা কিন্তু শরীরে জন্য ক্ষতিকর নয়। আমাদের ব্যবসায়ী এবং চাষিরা একদিন অপেক্ষ কিংবা পলিথিনে মুড়ে রাখতে চাচ্ছেন না। তারা সহজে এবং তাড়াতাড়ি কলা পাকানোর জন্য কার্বাইড দিচ্ছেন। কার্বাইড দেওয়া কলা শরীরের জন্য উপকারের চেয়ে ক্ষতিই করবে বেশি। আমরা জেনে বুেেঝ মানুষকে বিষ খেতে বাধ্য করছি।

আমরা চাই, আমাদের কৃষি বিভাগের আহ্বান অনুযায়ী সচেতনতা বাড়াতে হবে। কিটনাশক ব্যবহারে আরো সতর্ক হতে হবে। কোন ফসলে কোন কিটনাশক ব্যবহার করা যাবে সে ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানতে হবে এবং জানাতে হবে। একই সঙ্গে ফল-মূলে কার্বাইড, ফরমালিন দেওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।

আমাদের আহ্বান, ফরমালিন, কার্বাইড, কিটনাশকসহ ফল-মূলে রাসায়নিক ব্যবহার বন্ধ হাক। আপনি বঁচুন, আমাদের অনাগত প্রজন্মকে বাঁচাতে সহযোগিতা করুন।