কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে গণশুনানী

কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে গণশুনানী

দেশের সকল নাগরিকের জন্য জীবিকার নিশ্চয়তা, খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার নিশ্চিত করার জন্য এবং খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের জন্য জনমত তৈরিতে সর্বস্তরের জনগণের সম্পৃক্ততায় কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে বরিশালে গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নগরীর পুলিশ লাইন রোডস্থ সেলিব্রেশন পয়েন্টে বিশ^ খাদ্য দিবস উপলক্ষে প্রান্তজন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), বাংলাদেশ এর আয়োজনেওই গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়।  

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ‘খাদ্য অধিকার প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার। ক্ষুধা, দারিদ্রতা, পুস্টিহীনতার সঙ্গে  খাদ্য অধিকার ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। খাদ্য অধিকার কোন দাতব্য বিষয় নয়, বরং প্রত্যেক মানুষ নিজেদের খাদ্যের সংস্থান করবে সেটাই খাদ্য অধিকারের লক্ষ্য। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে খাদ্যকে জীবনধারণের মৌলিক চাহিদা হিসাবে চিহ্নিত করা হলেও ২০২০ সালের বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচকে ১১৩টি দেশের মধ্যে ৮৪তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ব নি¤েœ অবস্থান করছে’।

প্রবীণ উন্নয়ন সংগঠক আইসিডিএ-এর প্রধান উপদেষ্টা আনেয়ার জাহিদ এর সভপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানীতে প্রধান অতিথি ছিলেন, বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মোসাম্মৎ মরিয়ম, বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোসাম্মৎ ফাহিমা হক, বরিশাল সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা বিএম শফিকুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন ম্যাপ-এর নির্বাহী পরিচালক শুভংকর চক্রবর্তী।
এরপর শুনানীতে মাঠ পর্যায় কৃষকদের বিভিন্ন সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করেন কৃষক আমেনুল ইসলাম, মোসলেন হাওলাদার, সীমা আক্তার, কহিনুর বেগম, আনোয়ার হোসেন।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সচেতন নাগরিক কমিটি সনাক বরিশালের সভাপতি অধ্যাপক শাহ শাজেদা, বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন খন্দকার, ডেইলি স্টার এর ব্যুরো চিফ সুশান্ত ঘোষ, আরোহী নির্বাহী পরিচালক এটিএম খোরশেদ আলম, জনাক এর সদস্য রেবেকা সুলতানা, ঢাকা আহসানিয়া মিশন এর জেলা সমন্বয়কারী নাছির উদ্দিন, র‌্যাক এর নির্বাহী পরিচালক মুজিবুর রহমান খান।

বক্তারা বলেন, জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী দেশের আড়াই কোটি মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। ৪৪ শতাংশ নারী ভুগছে রক্তস্বল্পতায়। প্রকৃত উন্নয়নশীল দেশ হতে হলে এ পরিস্থিতি বদলাতে হবে। সে জন্য খাদ্য অধিকার আইন প্রনয়ণের উদ্যোগ অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। শুধুমাত্র সঠিক পুষ্টির অভাবে দেশের ৩১ শতাংশ শিশুর শারীরিক বিকাশ হয় না। বিশ্বের ৮১১ মিলিয়ন মানুষ প্রতি রাতে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যায়, তারপরও উৎপাদিত খাবারের তিন ভাগের এক ভাগ খাবার নষ্ট হচ্ছে। তাই দেশের সকল মানুষের জীবিকা, সংস্কৃতিভেদে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য এখনই জাতিসংঘ কৃষি ও খাদ্য সংস্থার ভলেন্টারি নির্দেশিকার আলোকে দেশে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করা জরুরি। এই আইন প্রণীত হলে সকল মানুষের খাদ্য ক্রয়ের জন্য আয়, খাদ্যের যোগান এবং সংস্কৃতিভেদে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের আইনী বাধ্যবাধকতা তৈরি হবে।