কোরবাণীর ঈদ সামনে রেখে আমতলী ও তালতলীতে প্রস্তুত ১৫ হাজার ১৯৬টি পশু

কোরবাণীর ঈদ সামনে রেখে আমতলী ও তালতলীতে প্রস্তুত ১৫ হাজার ১৯৬টি পশু

আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে বরগুনার দু’উপজেলা আমতলী ও তালতলীর বিভিন্ন খামারী ও স্থানীয় গৃহস্থ পরিবারগুলোয় ১৫ হাজার পশু প্রস্তুত করেছেন। দু’উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায়৪ হাজার ৬৬৩টি টি ছোট বড় খামার ও গৃহস্থ পরিবারে এসব গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। দু’উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি পশু বাইরের উপজেলাগুলোতেও বিক্রির জন্য পাঠানো হবে।

প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্র জানা গেছে, দু’উপজেলায় কোরবানি ঈদের জন্য পশুর চাহিদা ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ১২০টি। আমতলী উপজেলায় খামারি ও প্রান্তিক কৃষক মিলে এবার ৮ হাজার ২১৬টি পশু প্রস্তুত করেছেন। এর মধ্যে ষাঁড় ৪১৮৩ ও বলদ ৬৯২টি গাভীন ৫১২টি, মহিষ ৫৫১টি ও ২হাজার ২৭৮টি ছাগল রয়েছে। আমতলী উপজেলায় এ বছর কোরবাণীতে পশুর চাহিদা রয়েছে ৭ হাজার ১২৫টি। চাহিদা মিটিয়ে এখানে উবৃত্ত্ব রয়েছে ১০৯১টি পশু।  

অপরদিকে তালতলী উপজেলায় খামারি ও প্রান্তিক কৃষক মিলে এবার ৬ হাজার ২৯৫টি পশু প্রস্তুত করেছেন। এর মধ্যে ষাঁড় রয়েছে ২হাজার ৮২৭টি ও বলদ ৪০১টি, গাভীন ৮৮০টি, মহিষ, ৩৬টি, ছাগল ২৮১৭টি ও ভেড়া। এই উপজেলাতেও কোরবাণীতে পশুর চাহিদা রয়েছে ৬ হাজার ২৯৫টি। এখানেও চাহিদা মিটিয়ে উবৃত্ত্ব রয়েছে ৬৮৫টি পশু।  


প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে খামারি ও কৃষকরা গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত থাকেন। দেশে গত কয়েক বছর পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে কোরবানির হাটে পশু কম আমদানি করায় দেশি গরুর চাহিদা ছিল বেশি। খামারিদের লাভও ভালো হয়েছিলো। তাই এ বছরও কোরবানিকে সামনে রেখে দেশি গরু ও ছাগল মোটাতাজা করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার খামারি ও কৃষকরা। এ বছরও ভারতীয় গরু না এলে বেশ লাভবান হবেন বলে তারা আশা করছেন ।

পশু কেনাবেচার জন্য দু’উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মোট ১৫টি স্থায়ী এবং অস্থায়ী হাট-বাজার রয়েছে। ওই হাটগুলোর মধ্যে আমতলী উপজেলা সদরের গরুর বাজারটি বরিশাল বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় গরুর বাজার। এ ছাড়া গাজীপুর বন্দর গোহাট, চুনাখালী গোহাট, তালতলী উপজেলার বড়বগী গোহাট, ছোটবগী গোহাটটি বড়। এসব বাজারে বিভিন্ন স্থান থেকে বেপারিরা এসে গরু কিনে নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন। এছাড়া স্থানীয় বেপারিরা এলাকায় কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরু কিনে তা বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন।

সরেজমিনে একাধিক খামারে গিয়ে দেখা গেছে পালিত ষাঁড় গরুগুলো সবই দেশীয় জাতের। খামার ও গৃহস্থ পরিবারগুলোয় পালিত পশু গুলোকে খাদ্যের যোগান দিন যেতেই বাড়ানো হচ্ছে। ষাঁড় গরু মোটাতাজাকরণে গমের ভুসি ছাড়াও ছোলা ও মসুর ভুসি খাওয়ানো হচ্ছে।
বেশ কয়েকজন খামারি ও গৃহস্থ পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোরবানিকে সামনে রেখে ষাঁড় লালন-পালনে এবারে খরচ অনেক বেশি পড়ছে। 

আমতলীর খামারি ফারুক বলেন, দেশীয় জাতের মাঝারি মাপের তিনটি ষাঁড়কে এখন পুরোদমে খাদ্যের যোগান দিচ্ছেন।

আমতলী ও তালতলীর একাধিক খামারিরা বলেন, এবার কোরবানিকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করেছি। তবে গত কয়েক মাস থেকে কয়েক দফা গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সে অনুযায়ী বাজারে পশুর উপযুক্ত দাম নিয়ে শংকায় রয়েছি।

আমতলী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতা ডাঃ নাজমুল ইসলাম বলেন, আমতলীতে খামার মালিক ও গৃহস্থরা কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পালিত পশুর প্রায় সবই দেশীয় জাতের। অত্র উপজেলায় এ বছর কোরবানীতে ৭ হাজার ৮২৫টি পশুর চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুত করা হয়েছ ৮ হাজার ২১৬টি পশু। 

তালতলী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতা ডাঃ আলতাফ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, তালতলীতে কোরবাণীতে পশুর চাহিদা মিটিয়েও র উবৃত্ত্ব থাকবে ৬৮৫টি পশু। যা বাহিরের উপজেলার হাটে বিক্রির জন্য পাঠানো হবে।