গণমাধ্যম এড়িয়ে বরিশালের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা

গণমাধ্যম এড়িয়ে চলছেন বরিশালের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। গত টানা ৫ দিন ধরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হচ্ছেন না জেলা প্রশাসক। বিভাগীয় কমিশনারও গণমাধ্যম এড়িয়ে চলছেন ৪ দিন ধরে। এতে জনগণ প্রকৃত তথ্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে বলে মনে করেন গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দ।
গত ১৮ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মীরা উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের ব্যানার-বিলবোর্ড অপসারণ করতে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনের নিরাপত্তা কর্মীরা সিটি করপোরেশনের কর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় সিটি করপোরেশনের কর্মীসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হন অনেকে। এ ঘটনায় পরদিন ১৯ আগস্ট ইউএনও এবং পুলিশ বাদি হয়ে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহসহ ৬০২ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। ওইদিন সিটি করপোরেশনের মেয়রের বাসভবন ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। ওইদিনই জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বরিশালের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ১০ প্লাটুন বিজিবি এবং ১০ জন অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করার কথা সাংবাদিকদের জানান। ওইদিন সন্ধ্যায়ই বরিশালে বিজিবি মোতায়েনের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। সন্ধ্যা থেকে সাংবাদিকরা বিজিবি মোতায়েন সংক্রান্ত আপডেট তথ্য জানার জন্য জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু ওইদিন সন্ধ্যা থেকে গতকাল ২৪ আগস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক মূল ধারার গণমাধ্যম কর্মীদের ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি জেলা প্রশাসকের সরকারি বাংলোতে গেলেও বরিশালের টেলিভিশন সাংবাদিকদের সাক্ষাত দেননি তিনি।
এদিকে একই অবস্থা বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদলের। তিনি সর্বশেষ টেলিভিশন সাংবাদিকের সাক্ষাত দিয়েছেন ২০ আগস্ট। তারপর থেকে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন। ৩ দিন পর গতকাল দুপুরে এক টেলিভিশন সাংবাদিকের ফোন রিসিভ করে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ফোন না ধরার অপবাদ এড়াতেই তিনি ওই সাংবাদিকের ফোন রিসিভ করেছেন। ওই সাংবাদিক টেলিভিশন ক্যামেরায় একটি সাক্ষাত চাইলে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, এই মুহূর্তে তিনি কোন গণমাধ্যমে সাক্ষাত দেবেন না। কেন সাক্ষাত দেবেন না এই প্রশ্নেরও জবাব দেননি তিনি। সময় হলে সাংবাদিকদের ডেকে সাক্ষাত দেয়া হবে বলে তাকে আশ্বস্ত করেন তিনি।
এ ব্যাপারে আলাপকালে সাংবাদিক ইউনিয়ন বরিশালের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরণ বলেন, প্রশাসনের এমন আচরণ দেশ ও জাতির জন্য অমঙ্গলকর। গণমাধ্যম এড়িয়ে গেলে ভুল তথ্য উপস্থাপিত হতে পারে। এতে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশী। প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তারা ক্রান্তিকালে গণমাধ্যম এড়িয়ে চললে একপেশে তথ্য প্রকাশ হতে পারে। তাই তাদের এ ধরণের আচরণ পরিহার করা উচিত।
এদিকে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা গণমাধ্যম এড়িয়ে চললেও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বাভাবিকভাবে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানান সাংবাদিক নেতা সাইফুর রহমান মিরণ।